নিউজ ডেস্কঃ
সনাতন কৃষি থেকে বের হয়ে আধুনিক কৃষির সাম্রাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেমন সদা সচেষ্ট বর্তমান কৃষিকে ধরে রেখে আগামীর কৃষি যেন খোরপোষের কৃষি থেকে বাণিজ্যিক কৃষিতে পরিণত হয় সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করছেন, তেমনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুযোগ্য কৃষি মন্ত্রী দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে কৃষককে নিয়ে ভাবছেন বাণিজ্যিকায়ণের ক্ষেত্রে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে।
বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের যুগোপযোগী নীতির কারণে বাংলাদেশের কৃষি আজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য একটি রোল মডেল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কৃষির সকল সেক্টরেই আমাদের সফলতা অভাবনীয়। মাঠ ফসল বিশেষ করে দানা জাতীয় শস্য উৎপাদনে আমরা বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করে আসছি। এ অর্জন ধরে রাখার পাশাপাশি আমাদের এখন নজর দিতে হবে উদ্যান ফসল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে। বর্তমানে সরকার তথা কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও মাঠপর্যায়ে চাষীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তাও অর্জন হবে। উদ্যান ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন উদ্ভাবিত ও সমসাময়িক আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার এবং জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাবসমূহকে বিবেচনায় আনতে হবে এবং এজন্য দেশের প্রতিটি অঞ্চলে এধরনের প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন হর্টিকালচার সেন্টারের মাধ্যমে সকল ধরনের উদ্যান ফসল বিষয়ক সেবা প্রাপ্তি সহজ হবে।
বাণিজ্যিক কৃষির যে সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে সেই বাণিজ্যিকায়ণের বাহক দুটি সম্ভাবনাময় ফসলের একটি কাজু বাদাম, অন্যটি কফি। কাজু বাদামেই আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখার ইচ্ছা। প্রাথমিক অবস্থায় কাজুবাদাম গাছ পাহাড়ী অঞ্চলে কৃষি পূনর্বাসন কার্যক্রমের সাথে ভূমিক্ষয়, ভূমিধ্বস ইত্যাদির জন্য লাগানো হলেও বর্তমানে এই গাছটি দ্রুত বর্ধনশীল, পরিবেশ বান্ধব এবং লাভ জনক হওয়ায় পাহাড়ী/সমতল জমির পতিত জায়গায় রোপনের কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। ইহার বীজ থেকে পাওয়া বাদাম সুস্বাদু, মুখরোচক ও পূষ্টিকর এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়েও মূল্যবান। বাদামের খোলসের তৈল শিল্প কাজে ব্যবহৃত মূল্যবান দ্রব্য। তাছাড়া বাদামের উপরের অংশে ফল থেকে জুস, ভিনিগার এবং এলকোহল তৈরী করা যায়। বৃক্ষজাতীয় ফলের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কাজু বাদামের স্থান তৃতীয়। আমাদের দেশের জলবায়ু কাজু বাদাম চাষের বেশ সহায়ক। পাহাড়ী অঞ্চলে ব্যাপক কাজু বাদাম চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা এখানে স্বল্প মূল্যে প্রচুর জমি পাওয়া যায়, যেখানে কাজু বাদাম চাষ করার যথেষ্ঠ সুযোগ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে কাজুবাদামের চাহিদা প্রচুর রয়েছে এবং এই চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। বৈশ্বিক ৩৫ লাখ টন উৎপাদিত কাজু বাদামের মধ্যে যেখানে আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রায় ১২ লাখ টন, ভারতে ৭ লাখ ৪৬ হাজার টন, ভিয়েতমানে ৪ লাখ টনের মতো কাজু বাদাম উৎপাদিত হয়, সেখানে বাংলাদেশে উৎপাদন মাত্র ১ হাজার টন। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে কাজুবাদামের আমদানী ২০১৪-১৫ সালে ছিলো ১৮, ০০০ কেজি যা ২০১৮-১৯ সালে বেড়ে দাড়িয়েছে ৫,৮০,০০০ কেজি (সূত্র:এনবিআর)। আভ্যন্তরিন এই ব্যাপক চাহিদা মিটিয়েও কাজুবাদাম রপ্তানী করে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশের অন্যতম অনুন্নত এলাকা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব কোনে অবস্থিত তিনটি জেলা যথাঃ রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল গঠিত। বাংলাদেশের প্রায় ১২% এলাকা বিভিন্ন উচ্চতার পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত তন্মধ্যে ১০% পাহাড় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত। এই অঞ্চলে ২৬ টি উপজেলা, ১২১টি ইউনিয়ন, ৭টি পৌরসভা এবং ৪৫৫টি কৃষি ব্লক আছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মোট আয়তন ১৩,২৯,৫০০ হেক্টর এবং জনসংখ্যা ১৭,৩৭,৮৭৪ জন। অত্র অঞ্চলে নীট আবাদী জমি ১,২৯,৯২২ হেক্টর এবং ফসলের নিবিড়তা ১৫৯% যা জাতীয় শস্য নিবিড়তার তুলনায় অনেক কম। বিগত ৫ বছর যাবৎ এই এলাকায় খাদ্য চাহিদার তুলনায় খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। ২০১৭-১৮ সনে খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২২,৬২৫ মেট্রিক টন। পার্বত্য এলাকায় আবাদযোগ্য মাঠ ফসলী জমি আছে মাত্র মোট জমির ৫ শতাংশ। সমতল জমির অভাবে এখানে মাঠ ফসলের আবাদ সম্প্রসারণের সুযোগ খুবই সীমিত। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৯২% উঁচুভূমি, ২% মধ্যম উঁচুভূমি এবং ১% নিচুভূমি আছে।
অন্যদিকে, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে কৃষকগণ তাদের খাদ্যের চাহিদা মিটাতে পাহাড়ের ঢালে অপরিকল্পিত ভাবে চাষাবাদ করে থাকেন। এর ফলে একদিকে যেমন ভূমি ক্ষয় এভং ভূমির উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায় অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হয়। আজ থেকে প্রায় ৩০-৩৫ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এবং উদ্যান উন্নয়ন বিভাগ (কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ) সমন্বয়ে পার্বত্য এলাকায় কৃষি উন্নয়নের জন্য প্রচুর পরিমাণে অন্যান্য ফলের চারা/কলমের সাথে কাজু বাদামের চারা সরবরাহ করে থাকে। কালের চক্রে কাজু বাদাম গাছ বড় হয়ে ফল দিতে থাকে। কিন্তু কাজু বাদামের বিক্রি, বাজারজাত করা বা প্রক্রিয়াজাত করার কোন প্রকার ব্যবস্থা তেমন ছিল না। শুধু রাঙ্গামাটিতে দেশীয় পদ্ধতিতে স্বল্প কিছু কাজু বাদাম প্রক্রিয়াজাত করা হতো। তবে বিপুল পরিমাণ কাজু বাদাম অবিক্রীত থেকেই যেত। লোকসান বিধায় কাজু বাদামের প্রতি কৃষকগণ অনীহা প্রকাশ করে এবং অনেকে প্রতিষ্ঠিত বাগানের গাছ কেটে ফেলে। পরবর্তীতে কিছু রপ্তানিকারক ভারত, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে স্বল্প পরিমাণে কাজু বাদাম রপ্তানি করতে থাকে। বর্তমানে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এবং নীলফামারীতে ব্যক্তি উদ্যোগে দুটি কাজুবাদামের প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বর্তমানে পার্বত্য এলাকার মোট ভূমির প্রায় ২২ শত্যাংশ উদ্যান ফসলের আওতায় আনার সম্ভাবনা রয়েছে। এই এলাকার জমি মসলা জাতীয় ফসল ও ফলের বাগানের জন্য অত্যন্ত উপযোগী, কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার অনেক পাহাড়ী ভূমি এখনও আবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার ভূ-প্রাকৃতির অবস্থান ও আবহাওয়া বিবেচনায়, এখানে কাজুবাদাম, কফি, উদ্যান ও মসলা জাতীয় ফসল আবাদের অনেক সুযোগ রয়েছে। দরিদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের এসকল ফসল আবাদে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।
কাজুবাদামের অর্থনৈতিক গুরুত্বঃ
বৃক্ষ জাতীয় ফলের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কাজু বাদামের স্থান তৃতীয়। আর বাদাম জাতীয় ফসলে কাজু বাদাম, প্রথম স্থানে । আমাদের দেশে এক কেজি প্রক্রিয়াজাত করা প্যাকেটকৃত বাদামের মূল্য প্রায় ১০০০/–১২০০/- টাকা। সাধারণ কৃষকগন প্রক্রিয়াজাত করতে না পারলেও শুধু বাদাম বিক্রি করে টন প্রতি প্রায় ৬০,০০০/- থেকে ১,০০০০০/- টাকা পেয়ে থাকেন। তবে এর বাজার বেশ পরিবর্তনশীল। বিশ্বে শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ ভিয়েতনাম ২০১৯ সালে ৩.৬ বিলিয়ন ডলারের মতো কাজুবাদাম রপ্তানী করেছে। বাংলাদেশ ২০১৯-২০ সালে ভিয়েতনামে ও ভারতে কাঁচা কাজুবাদাম যেখানে রপ্তনি করেছে মাত্র ৩.৫৭ লাখ ডলারের, সেখানে প্রস্তুত বাদাম আমদানীই করেছে ভিয়েতমান থেকে ৮৫৭ টন। আমদানী-রপ্তানীর এই পরিসংখ্যান থেকে কাজু বাদামের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করাটা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। ২০২০ সালের উৎপাদন হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে কাজু বাদামের ফলন প্রতি হেক্টরে ১.৩২৩ টন (সূত্র: প্রথম আলো, ১৫ আগষ্ট,২০২০)।
পাহাড়ী অঞ্চলে কাজু বাদামের উন্নয়ন সম্ভাবনাঃ
কাজু বাদাম চাষের উপযুক্ত আবহাওয়া ২৫ ডিগ্রী সেন্টিঃ থেকে ২৭ ডিগ্রী সেন্টিঃ তাপমাত্রা, ১০০০মিমি থেকে ২০০০মিমি বাৎসরিক বৃষ্টিপাত, ৫০০মিঃ থেকে -১০০০মিটার সমূদ্র পৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা এবং বন্যা মুক্ত অম্লীয় বালি বা বালি দোআশ মাটি। এসব বিষয় গুলি বিবেচনা করলে কাজু বাদাম চাষের উপযুক্ত জমি পাহাড়ী অঞ্চলের প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। পাহাড়ী এলাকায় নভেম্বর থেকে প্রায় এপ্রিল/মে মাস পর্যন্ত সাধরণত কোন বৃষ্টিপাত হয় না। অর্থ্যাৎ ৫/৬ মাস পাহাড়ী ভূমি বৃষ্টি বিহীন অবস্থায় থাকে। আবার সেখানে সেচ দেওয়ার তেমন কোন সুযোগ সুবিধা নেই। মার্চ এপ্রিল মাসে প্রচন্ড খরা এবং গরম হাওয়া বিদ্যমান থাকে। সে অবস্থায়ও কাজু বাদাম বেশ ভাল ফলন দিয়ে থাকে। আবার স্বল্প মূল্যের জমি এবং কর্মঠ শ্রমিক প্রাপ্যতা এখানে রয়েছে। জমি হল কৃষির মূল উপাদান , ইহা ছাড়া কৃষি অচল ও অসম্ভব। সমতল এলাকায় কাজু বাদাম করার মত স্বল্প মূল্যের ভুমি পাওয়াটা দুস্কর। বান্দরবনে ১,৭৯৭ হেক্টর জমিতে ৮.৬৯ লাখ কাজু বাদামের গাছ রয়েছে। বান্দরবনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফলন থানচি উপজেলায়, মোট আবাদের ৫০ শতাংশই হয় এই উপজেলায়। এরপর রুমা, রোয়াংছড়ি এবং সদরে কাজুবাদামের চাষ হয়।
কত মানুষ এই পেশার সাথে জড়িতঃ
কাজুবাদাম উৎপাদন সংগ্রহ, শুকানো ও সংরক্ষণ কাজে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে কাজুবাদামের ফল থেকে কাজুবাদাম সংগ্রহের সময় অবশ্যই শ্রমিকের মাধ্যমে সমাধান করতে হয়। তাছাড়া আধুনিক মেশিনে প্রক্রিয়া জাত করা হলেও সেখানে পিলিং ও গ্রেডিং ইত্যাদি কাজে শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, কাজুবাদামের উৎপাদন শিল্পের সাথে জড়িত প্রায় ৯০ ভাগ শ্রমিকই নারী। তাই এই শিল্পকে নারী বান্ধব বিশেষ করে অবহেলিত নারীর কর্মসংস্থানের বিরাট সুযোগ রয়েছে। দৈনিক ৪ (চার) টন কাজুবাদাম প্রক্রিয়া জাত হয় এমন ফেক্টরীতে দৈনিক প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। ২০১৬ সালে কাজুবাদামের কারখানা যেখানে ছিলো মাত্র একটি, এখন সেখানে কারখানার সংখ্যা বেড়ে ২টি হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাতো রয়েছেনই। গত বছর হতে ফলন ও কারখানা গড়ে তুলতে কাজ শুরু করেছেন দেশের ইস্পাত খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম গ্রুপ।
কোন জাতের কাজুবাদাম ভালঃ
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাচীণ জাতের কাজুবাদাম চাষ হয়ে থাকে। এই জাতের কাজুবাদামের ফলন কম এবং দেরীতে ফলন পাওয়া যায়। ইদানীং ভারত ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কায় কিছু কিছু উন্নত জাত আবিষ্কার হয়েছে, যেগুলিতে ফলন ৪/৫ গুন বেশী এবং ছোট ছোট গাছে প্রচুর ফলন দেয়। বছরব্যাপী ফল উৎপাদন ও পুষ্টি প্রকল্পের মাধ্যমে ভারত ও ভিয়েতনাম হতে উন্নত নতুন জাতের VLA-4, ভাস্করা, OP-09 চারা কলম এনে দেশের বিভিন্ন হর্টিকালচার সেন্টারে মাতৃগাছ তৈরি করার কাজ চলমান আছে।
কাজু বাদামের পুষ্টি গুণঃ
ক) খাদ্য মানের দিক দিয়ে কাজু বাদাম অতি পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর। এ বাদামে শতকরা ২১ ভাগ আমিষ, ৪৭ ভাগ স্নেহ, ২২ ভাগ শর্করা, ২.৪ ভাগ খনিজ পদার্থ ০.৪৫ ভাগ ফসফরাস, ০.৫৫ ভাগ ক্যালসিয়াম এবং প্রতি ১০০ গ্রাম বাদামে ৫ মিলি গ্রাম লোহ ৭৩০ মি,গ্রা ভিটামিন বি-১, ১১০ মিলিগ্রাম রাইবোফ্লোবিন রয়েছে। প্রচুর শর্করা, আমিষ, ¯স্নেহ, খনিজ পদার্থ, ভিটামিনসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য রক্ষায় উপকারী অনেক ফাইটো ক্যামিক্যাল্স রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বিশেষজ্ঞদের মতে স্বাস্থ্যের জন্য কাজুবাদাম নিম্নের কাজ করে থাকে –
১। হৃদপিন্ডের শক্তিদায়ক।
২। হাড় ও দাতের গঠনে সাহায্যে করে।
৩। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৪। হজমে সাহায্যে করে।
৫। চুলের উপকার করে।
৬। পিত্তথলি/কিডনী পাথর তৈরীতে বাধা দেয়।
৭। ভালো ঘুম আনয়ন করে।
৮। স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ সবল করে।
৯। ব্লাড প্রেসার কমায়।
১০। ডায়বেটিস রোগীর জন্য উপকারী।
১১। রক্ত শুন্যতা কাজ ক…
১২। অবসাদ দূর করে ইত্যাদি।
অর্গানিক কাজু বাদাম চাষের গুরুত্বঃ
ইদানিং দেখা যায়, আগের তুলনায় মারাত্বক রোগ যেমন- ক্যানন্সার, ডায়বেটিস, হার্টের রোগ, ব্লাড প্রেসার, কিডনী, লিভার সহ শারীরিক সমস্যা অনেক বেশী দেখা যায়। বিশেষজ্ঞের মতে এগুলির অনেক কারণ থাকলেও বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্যসহ বালাই নাশকের অপব্যবহার একটি প্রধান কারণ। আমরা কৃষি পণ্য উৎপাদন করতে কৃত্রিম রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার যত কমাতে পারবো ততই মানব স্বাস্থ্য রক্ষায় উপকার হবে। বিগত কয়েকদিন পূর্বে মন্ত্রী পরিষদ সভায় বাংলাদেশে জৈব কৃষিনীতি অনুমোদন করেছে। আমরা অন্যান্য ফল ফসলের মতো কাজু বাদাম উৎপাদনে জৈব কৃষি নীতি পালন করে , এদেশে এবং আন্তর্জাতিক বাজারেও ভাল দামে বিক্রির সুযোগ পাবো ।আর আর্ন্তজাতিক বাজারে অর্গানিক ফসলের চাহিদা তো দিন দিন বাড়ছেই।
উদ্যান ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলা, পুষ্টি চাহিদা পুরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য গুণগতমান সম্পন্ন ও নিরাপদ খাদ্য চাহিদা পূরণ, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে কৃষি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ কৃষিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণের ফলে কাঙ্খিত কৃষি প্রবৃদ্ধি অর্জন ত্বরান্বিত হবে, মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ বাড়বে তথা দেশের সামগ্রিক ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
সুত্রঃআধুনিক কৃষি খামার