আতঙ্কে খুলনা অঞ্চলের চিংড়ি চাষিরাআতঙ্কে খুলনা অঞ্চলের চিংড়ি চাষিরা

নিউজ ডেস্কঃ
করোনার প্রভাবে রফতানি বন্ধ থাকায় এমনিতেই সংকটে আছেন খুলনা অঞ্চলের চিংড়ি চাষিরা। তার ওপর ঘেরে ছাড়া চিংড়ি মাছ নিয়ে এখন আছেন অজানা আতঙ্কে। ঘেরে ছাড়া মাছের এক তৃতীয়াংশও পাচ্ছেন না তারা। এমনকি মরা মাছও পাচ্ছেন না।

খুলনা বিভাগীয় পোনা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া রিপন বলেন, পোনা না পাওয়া ও ব্যবসা নিয়ে আতঙ্কসহ নানা উদ্বেগ থাকার পরও চাষিরা বেশি দামে পোনা কিনে ঘেরে ছাড়েন। কিন্তু এখন গোনের সময় মাছ ধরতে গিয়ে মাছ পাচ্ছেন না। গোনের সময় ৮০০-৯০০ গ্রাম মাছ পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু সেখানে এখন ২০০ গ্রামও মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ৫-৬ দিনের চক্রে একেকটি গোন থাকে। এই গোনে মাছ ধরতে গিয়ে চাষিরা হতাশ হচ্ছেন।
মৎস্য চাষী ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঘেরে মাছ ছেড়েছিলাম। কিন্তু আম্পানের আঘাতের একটি ধাক্কা গেল। এখন গোনের সময় মাছ ধরতে গিয়ে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ঘেরে কোনও মরা মাছও পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে ঘের থেকে মাছ যাচ্ছে কোথায়?’
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু ছাঈদ বলেন, খুলনায় চাষিরা চিংড়ি পোনা ছাড়েন ঘেরের পানির লেবেল হিসাব করেই। কম পানিতে মাছ ছাড়া, পানির তাপমাত্রা ঠিক না থাকা, পানি অতিরিক্ত গরম ও ঠান্ডা হওয়ার কারণে চিংড়ির পোনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পোনা ছাড়ার পর তা ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেখা যাবে না। তাই এখন চিংড়ি বড় হওয়ার পর ধরার সময় প্রত্যাশিত মাছ পাচ্ছেন না। তাই তারা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।

তিনি বলেন, এ অঞ্চলের চাষিরা ঘেরের যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে না। জোয়ার ভাটার পানির ভরসায় মাছ ছেড়ে সামান্য লাভেই চাষিরা সন্তুষ্ট। তাই, ঘেরের যথাযথ পরিচর্যা হয় না। ফলে এখন ঘেরে মাছ পাচ্ছে না।
খুলনা জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, আম্পানের কবলে পড়ে খুলনার ৫টি উপজেলার মৎস্যখাতে ৯৬ কোটি ৭২ লাখ ৪৩ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর মধ্যে সাদা মাছ রয়েছে ২৯ কোটি ২৫ লাখ ৯ হাজার টাকার ও চিংড়ি মাছ ৫৯ কোটি ৪২ লাখ ৬ হাজার টাকার। সাদা মাছের পোনা রয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ও চিংড়ির পোনা রয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকার। ৮৫৭৭ দশমিক ৮ হেক্টর জমিতে থাকা ৬ হাজার ৮৬৬টি সাদা মাছ ও চিংড়ি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিভাগীয় মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চিংড়ি উৎপাদন করে।

সুত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *