নিউজ ডেস্কঃ
বাংলার সৌন্দর্য্যের রাজা বলে পরিচিত গ্রীষ্মকাল। শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই মধুময় কুহুতানে মাতাল করতে আবারো ফিরে এলো বাংলার বুক মাতাল করতে ঋতুরাজ বসন্ত।
সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে জেলার সর্বত্রই।
রঙিন বন ফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে। তেমনি সাজে সেজেছে জামালপুরের ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ি, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ ও জামালপুর সদর উপজেলা বিভিন্ন এলাকার আম বাগানগুলো। গাছ জুড়ে আমের আগাম মুকুলের ঘনঘটা। পাতা দেখার যেন উপায় নেই। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এর সুগন্ধ। নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক মাস আগেই আবহাওয়াগত ও জাতের কারণেই মূলত আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে গাছগুলোতে।
মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া, ঝাউগড়া, ফুলকোচা, চরবাণী পাকুরিয়া ইউপির গ্রামগুলোতে গাছে গাছে আমরে মঞ্জুরি। দৃশ্যগুলো যে কাউকেই কাছে টানবে।
প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কম হওয়ায় বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেঁয়ে গেছে ইউপির প্রত্যেকটি গ্রামের আম গাছগুলো। মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আম গুটি।
গাছ মালিকরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এতে বুঝা যায় গাছ মালিক ও ব্যবসায়ীরা ভালো ফলনের স্বপ্ন বুনছেন।
জেলার মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউপির চাড়ালকান্দি গ্রামের আম গাছের মালিক মালেক আফসারী বলেন, আমার বড় বড় আম গাছ আছে। অধিকাংশ গাছই এরইমধ্যে মুকুলে ছেঁয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম হওয়ায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে।
ফুলকোঁচা ইউপির দিলালেরপাড়া গ্রামের আম চাষি সোবহান আলী বলেন, আম বাগানে এবার আগে ভাগে মুকুল এসেছে। এখন আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি।
ঝাউগড়া ইউপির পলাশী গ্রামের ছামিউল আলম বলেন, এবার আমার বাগানের গাছে গাছে প্রচুর আমের মুকুল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এর সুগন্ধ। বাগান জুড়ে আম গাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
প্রাকৃতিক কারণেই এবার আগেভাগেই আম গাছে মুকুল এসেছে। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। এখন পর্যন্ত কুয়াশা তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। ফলে আমের মুকুল সস্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
ইউনিয়নগুলোতে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি অফিসাররা জানান, আমরা মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত তদারকি করছি। আম চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে প্রস্তুত আছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক মো. আমিনুল ইসলামের দাবি আম গাছে মুকুল আসার ১৫ দিন আগে পর্যাপ্ত স্প্রে দিতে হবে। মুকুল ফোটার সময় মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলে বিভিন্ন রোগের আক্রমণ হতে পারে। তবে এ বছর কুয়াশা তেমন একটা নেই। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাগণ নিয়মিত খোঁজ খবর নিয়ে বাগান মালিকদের পরামর্শ দিচ্ছে। যথাযথ পরিচর্যা না করলে ঝরে পড়ে আমের ফলনে ক্ষতিপ্রস্ত হতে পারে বলেও তিনি জানান।
সুত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ