এক বিলেই ফুটেছে তিন রঙের পদ্ম ফুলএক বিলেই ফুটেছে তিন রঙের পদ্ম ফুল

নিউজ ডেস্কঃ

বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে বর্ষা ও শরৎকালে বিলের মাঝে ফুটন্ত পদ্ম ফুলের দৃশ্য সবারই নজর কাড়ে। তবে প্রকৃতি বৈরিতায় আগের মতো বিল-ঝিলের জৌলুস হারিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পদ্মফুলসহ আরো অনেক জলজ উদ্ভিদ আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে।

কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রাম। সেখানকার অন্তত ১০ একর জমিতে ফুটে আছে তিন রঙা পদ্মফুল। নীল, সাদা ও হলুদ রংয়ের পদ্মফুলে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে বিলজুড়ে। উপরে শরতের নীল আকাশের সঙ্গে বিলে পদ্মের হাসিতে স্বর্গীয় আবেশ তৈরি হয়েছে। এ কারণে দর্শনার্থীদের তুমুল আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রামের পদ্মবিল।

পদ্ম (লোটাস নিম্ফেয়াসিয়া) গোত্রের ভাসমান জলজ উদ্ভিদ (নিলাম্বো নিউসিফেরা)। সারা বছর পানি থাকে এমন জায়গায় পদ্ম ভালো জন্মে। তবে খাল-বিল, হাওর, বাঁওড় ইত্যাদিতেও এ উদ্ভিদ জন্মে থাকে। পাতা বড় এবং গোলাকৃতি, কোনো কোনো পাতা পানিতে লেপটে থাকে, কোনোটা উঁচানো। বর্ষাকালে ফুল ফোটে। ফুল বৃহৎ এবং বহু পাপড়িযুক্ত। সাধারণত বোঁটার উপর খাড়া, ৮-১৫ সে.মি. চওড়া। ফুলের রং লাল, গোলাপি ও সাদা, সুগন্ধিযুক্ত। পদ্মের মূল, কাণ্ড, ফুলের বৃন্ত ও বীজ খাওয়া যায়। পুরনো গাছের কন্দ এবং বীজের সাহায্যে এদের বংশবিস্তার হয়। এটি ভারতের জাতীয় ফুল।

পদ্ম উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে বেশি জন্মে থাকে। ইরান, চীন, জাপান, নিউ গায়েনা, বাংলাদেশ, ভারত ও অষ্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে পদ্ম জন্মে। বিশুদ্ধতা, সৌন্দর্য ও পবিত্রতার প্রতীক হওয়ায় নিচু বংশকূলে জন্ম গ্রহণ করে বিখ্যাত বা উচ্চ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত হলে তখন সেই ব্যক্তিটি ‘গোবরে পদ্মফুল’ নামক বাগধারায় পরিণত হয় এই পদ্মের কারণে।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রামে রবিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিলের পাশে সারি সারি নৌকা বাঁধা। দর্শনার্থীরা নৌকা ভাড়া করছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে পদ্মবিলে ঘুরছেন। পদ্মফুলের পাশাপাশি রয়েছে সাদা নীল শাপলা। পদ্মবিলের মাঝে নানান প্রজাতির পাখি উড়াউড়ি করছে। ডাহুক, সারস, বালিহাস খাবারের খুঁজে ঘুরে ফিরছে। বিলের মাঝে ফুটে আছে হলুদ, নীল ও সাদা রংয়ের পদ্মফুল।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: শাহিন জানান, কিছুদিন আগে এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এসেছেন। তারা এখানে পদ্মফুলের উপর গবেষণা করেছেন। বিকেলে দর্শনার্থীরা আসেন। আমরা পদ্মবিলের বিষয়ে কিছু বিধি-নিষেধ জারি করেছি। বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রামে বিলের যেসব পদ্ম ফুটে সেসব পদ্ম আকারে বেশ বড়। তিন রংয়ের পদ্ম বাংলাদেশে এটাই প্রথম। তবে রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে তা এখন হুমকির মুখে আছে।

পদ্ম বিলের মাঝে নৌকা চালান সোহেল। তিনি জানান, পদ্মবিল সংরক্ষণ করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে তা হয়তো আর থাকবে না। বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: আবুল ফজল মীর বলেন, বুড়িচংয়ের পদ্মবিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এসেছেন। তারা জানিয়েছেন আমেরিকাতে এমন পদ্মফুল ফুটে। আর বাংলাদেশে বুড়িচংয়ে রয়েছে এমন পদ্মফুল। এই বিলে যে পদ্ম ফুটে তা নিশ্চয়ই অনেক দর্শণীয়। কুমিল্লা জেলা প্রশাসন এই বিলটি সংরক্ষণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

সুত্রঃ ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *