দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়ায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। প্রতি কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৫ টাকা দরে।
পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকা ও ভারতীয় কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণকারী সংস্থা ‘ন্যাপেড’ পেঁয়াজ রপ্তানিতে কোনো মূল্য না বাড়ালেও পেঁয়াজ আমদানিতে উৎসাহ নেই আমদানিকারকদের। তবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আকস্মিক বন্যা দেখা দেওয়ায় ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে। সে কারণে পেঁয়াজসংকট দেখা দিয়েছে ভারতে।
ভারতের স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২২ থেকে ২৩ রুপির মধ্যে। আর খুচরা বাজারে ২৪ থেকে ২৬ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। আগে ছিল ১৬ থেকে ১৮ রুপি কেজি।
গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত (১৩ দিনে) দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে মাত্র ৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে ২২ সেপ্টেম্বর ৩০ টন ও ৩০ সেপ্টেম্বর ৩০ টন আমদানি হয় এ পথে।
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বেশি না হওয়ায় দেশি বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা বেড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার মনিটরিং থাকলে দাম কিছুটা কম হতে পারে বলে ক্রেতারা বলেছেন।
বেনাপোল বন্দরের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা শুকুর আলী জানান, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি কম। আর যা আসছে তা অর্ধেক বস্তা পচা পাওয়া যাচ্ছে। এতে বাজারে দাম কমছে না। বাইরে থেকে আমদানি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এর বাজার অস্থিতিশীল থাকবে মনে হচ্ছে। বাংলাদেশে এর চাহিদার বেশির ভাগ পূরণ হয় ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নূরুল আমিন বিশ্বাস বলেন, আমি গত দুই চালানে মাত্র ৬০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছি। প্রতি মেট্রিক টন ২৬০ মার্কিন ডলারে এলসি করেছি। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতি টন ২২ হাজার ৮৭ টাকা। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বন্যা দেখা দেওয়ায় বাজারে পেঁয়াজ তেমন পাওয়া যাচ্ছে না।
বেনাপোল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, সর্বশেষ গত মাসের ২২ ও ৩০ তারিখে ভারত থেকে দুই চালানে ৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বেনাপোল কাস্টম হাউস থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি মেট্রিক টন ৩১০ মার্কিন ডলারে অ্যাসেসমেন্ট (শুল্কায়ন) হচ্ছে। যা বাংলাদেশি টাকায় ২৬ হাজার ৩৪৫ টাকা। পণ্য ছাড় করাতে ব্যবসায়ীদের শুল্কায়ন মূল্যের ওপর শতকরা ৫ ভাগ হারে শুল্ক ও ৫ ভাগ এআইটি পরিশোধ করতে হচ্ছে।
সুত্রঃ কালের কণ্ঠ