করোনা পরিস্থিতিতে ঈদুল আজহা, সতর্ক সিটি কর্পোরেশনকরোনা পরিস্থিতিতে ঈদুল আজহা, সতর্ক সিটি কর্পোরেশন

নিউজ ডেস্কঃ

চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পালন করতে হবে ঈদুল আজহা।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অন্যতম প্রধান উৎসব কোরবানির ঈদে যেন জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ঝুঁকিতে না পড়ে, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশন। রাজধানীবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপনের পরামর্শ দিয়েছেন দুই নগর পিতা।

আগামী ৩১ জুলাই অথবা ১ আগস্ট বাংলাদেশে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে নিজেদের মতো প্রস্তুতি শুরু করেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। পশুর হাট সীমিত আকারে নিয়ে আসার পাশাপাশি পশু জবাইয়ের নির্ধারিত স্থানও কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে পশুর হাট ও পশু জবাইয়ের স্থান নিয়েও।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) সূত্রে জানা যায়, কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিতে কড়াকড়ি থাকবে হাট ইজারাদারের প্রতি। স্বাস্থ্যবিধির শর্ত মানা না হলে বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে ইজারাদারের জামানত। ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালতও।

এবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে হাট বসানোর জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছিল সাতটি হাটের। তবে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মাঝে হওয়ায় সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাতিল করা হয়েছে তিনটি হাটের ইজারা। তবে বরাবরের মতো থাকছে গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাট।

এ বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কিছু আয় কম হবে তবে নগরবাসীর স্বাস্থ্যের ঝুঁকি আমরা নিতে পারি না। তাই তিনটি হাট বাতিল করা হয়েছে। হাটে যারা ইজারাদার থাকবেন তাদের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। যেমন আমরা বলেছি, প্রতিটি পশুর মাঝে যেন অন্তত ৫ ফিট ফাঁকা জায়গা থাকে। যদি তারা এটা না মানেন তাহলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে। এছাড়াও প্রতিটি হাটে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে।

পশুর জবাই দেওয়ার স্থান নিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, পশু জবাই দেওয়ার স্থান সীমিত আকারে করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। আমরা নগরবাসীদের বলব, তারা যেন নির্ধারিত স্থানে এসেই পশু জবাই দেন। এই দুর্যোগকালে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন আমাদের। তবে প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্ধারিত স্থান কোনটি হবে সেটি আমরা স্থানীয় কাউন্সিলর এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে ঠিক করে দেব।

করোনার মাঝেও ২৪ ঘণ্টার মাঝে বর্জ্য অপসারণ করা হবে বলেও জানান ডিএনসিসি মেয়র। তিনি বলেন, গতবার ডেঙ্গুর কারণে আমাদের বর্জ্য অপসারণের একটি চ্যালেঞ্জ ছিল, যেটি আমরা বেশ সফলতার সাথে মোকাবিলা করেছি। আমরা আশা করছি, এবারও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের এলাকা থেকে বর্জ্য অপসারণ করতে পারব। তবে যেমনটা বলছিলাম, নগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন আমাদের। এই কঠিন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতনত হবেন এবং আমাদের সহযোগিতা করবেন বলে আমরা আহবান জানাচ্ছি।

এদিকে নিজেদের এলাকায় এবার ১৪টি পশুর হাট ইজারা দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। সকল হাটে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি নিশ্চিতে ইজারাদারদের ইজারাপত্রে বিশেষ লিখিত শর্তারোপ করা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু নাসের।

তিনি বলেন, ইজাদাররাই স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। এটি শর্ত আকারে তাদের ইজারাপত্রেও উল্লেখ থাকবে। যারা মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবার প্রতিটি ওয়ার্ডে পশু জবাই করার নির্ধারিত স্থান পাঁচটি থেকে কমিয়ে দুটি করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। আর পশু জবাই শুরুর দুই ঘণ্টা পর থেকেই বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে পশু জবাইয়ের জন্য নগরবাসীদের মাঝে বিশেষ ব্যাগ ও জবাইয়ের স্থানগুলোতে ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হবে বলে জানায় ডিএনসিসি এবং ডিএসসিসি।

সুত্রঃ বাংলানিউজ২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *