নিউজ ডেস্কঃ
এবার মহামারি করোনাকালে রংপুরের হাড়িভাঙ্গার আমের বিক্রিবাট্টা নিয়ে চিন্তিত জেলার আমচাষীরা। সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে না পারার আশঙ্কা করছেন তারা। এদিকে মৌসুমের শুরুতেই আম বাজারে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অনেক আম চাষী আশঙ্কা করছেন আমের বাজার দর পতনের।
এদিকে আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছেন, এবার রংপুর অঞ্চলে হাড়িভাঙ্গার ফলন ভালো হয়েছে। সারাদেশে জনপ্রিয়তার তালিকায় থাকা এ আম এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সব আম পরিপক্ক হবে। এ সময়ে বাগান মালিকরা গাছ থেকে হাড়িভাঙ্গা আম পাড়তে পারতে শুরুও করেছেন। নতুন আম বাজারে উঠতেও শুরু করেছে। আবহাওয়া প্রতিকূলে বা প্রচন্ড গরম থাকলে সপ্তাহখানেক আগেও বাণিজ্যিকভাবে বাজারে হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করতে পারবেন আমচাষীরা।
এবার রংপুর অঞ্চলের রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলায় প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে সব জাতের আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র তিন হাজার হেক্টর জমিতে রয়েছে হাড়িভাঙ্গা আম। এ বছর রংপুরের মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন এলাকাতে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন হয়েছে। গত বছর প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ মেট্রিক টন। যা এবার ১৫ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে না পারার আশঙ্কা করছেন চাষীরা।
এদিকে ফলন ভালো হলেও গত দুই সপ্তাহের ঝড়-বাতাসে আমের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সবকিছু ঠিক থাকলে শুধু হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করে এবার দুইশ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারবেন এ জেলার আমচাষীরা।
অপরদিকে দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ করে আসা আব্দুস ছালাম জানান, তিনি এবার ১৪ একর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ করেছেন। বিগত বছর এ সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা অধিকাংশ আম চাষিদের বাগান কিনে নিতেন। কিন্তু এবার করোনার কারণে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। ইতিমধ্যে গত কয়েক দিনের ঝড় ও বৃষ্টিতে তার বাগানের অনেক আম নষ্ট হয়ে গেছে। হাড়িভাঙ্গা আমের সম্প্রসারক হিসেবে পরিচিত মিঠাপুকুরের সফল এ আমচাষী জানান, আম পরিপক্ক হয়ে উঠছে। ফলে এখন বাজারজাত করা শুরু হবে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড, সারোয়ারুল হক জানান, দেশের অন্যান্য স্থানের আম শেষ হয়ে যাওয়ার পর হাড়িভাঙ্গা আম বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসে। এই আম বাজারে আসতে শুরু করেছে।
রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, ইতিমধ্যে বিখ্যাত এ আমের বাজারজাতকরণে কৃষি বিভাগ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বড় বড় চাষিদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের অনলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করানো হচ্ছে। আমচাষীদের তালিকা করা হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির ওপর এবার অনেক কিছু নির্ভর করছে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক