নিউজ ডেস্কঃ
কিশোরগঞ্জে পাটে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। গত ৩ বছর যাবত ক্রমান্বয়ে বাড়ছে পাট আবাদ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা ক্ষেত থেকে পাট কাটা ও পচানো (জাগ) পাট থেকে আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সোমবার (১০ আগস্ট) সরজমিনে ঘুুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ খরিপ মৌসুমে ১৪৮৭৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিলো। ২০১৯-২০ খরিপ মৌসুমে ১৫৫০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ এবং ২০২০-২১ খরিপ মৌসুমে ১৬৭৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। বাজারে দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে বিধায় কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং ক্রমান্বয়ে আবাদ বাড়ছে। গত বছর ১৮০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমের শুরুতে মানভেদে ২৪০০-২৫০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বেশির ভাগ এলাকায় ক্ষেত থেকে পাট কাটা হচ্ছে। কোথাও মাঠ থেকে কাটা পাট অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোথাও চলছে পাট পচানোর প্রস্তুতি। আবার পচানো পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজও চলছে। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর আগেও কৃষকরা পাট চাষ করে লোকসানে পড়েছিলেন। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকে পড়েন। স্বল্প পরিসরে যারা আবাদ ধরে রেখেছিলেন, তারাই লাভবান হয়েছেন। লাভ বাড়ছে তাই কৃষকরা ঝুঁকছেন পাট চাষে। বর্তমানে কৃষকরা খুব সহজে ও ভালো দামে পাট বিক্রি করতে পারছেন।
করিমগঞ্জ উপজেলার সাকুয়া গ্রামের কৃষক হোসেন আলী এবার পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি জানান, পাটের আবাদ বেড়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে।
সদর উপজেলার নীলগঞ্জ বাজারের পাইকারি পাট ব্যবসায়ী ইয়াসিন মিয়া জানান, পাট আসতে শুরু করেছে। বাজার দরও ভালো। কৃষকরা ভালো দাম পাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্র কিশোরগঞ্জের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ আবুল বাশার বলেন, দিন দিন কিশোরগঞ্জে পাটের আবাদ বিশেষ করে কেনাফের খুবই জনপ্রিয় জাত এইচসি-৯৫ এর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকরা বাহিরের আমদানিকৃত বীজ আবাদ করে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন কিন্তু বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত জাতের আবাদ করে তারা বেশি ফলন পাচ্ছেন। ইন্ডিয়ান কেনাফের জাতের আবাদ করে যেখানে প্রতি কাঠায়(১০ শতাংশে) ১-১.৫ মন পান সেখানে পাট গবেষণার বীজের ফলন প্রতি কাঠায় ৩-৩.৫ মন পাচ্ছেন কৃষক।
কিশোরগঞ্জ খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক সাইফুল আলম জানান, পাটে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিপণনের মাধ্যমগুলো ধরে রাখা গেলে সোনালি আঁশ পাট আবারও দেশের জন্য সোনালি বার্তা বয়ে আনবে।
sutro:kolom24