আবহাওয়া অনুকূল থাকায় গোপালগঞ্জে এবার কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই সাথে ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। তাই এ কুলের আবাদ হচ্ছে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে। বিভিন্ন জাতের কুলের চাষ হচ্ছে মাঠের পর মাঠ।
তাই গোপালগঞ্জের ফল চাষিরা এই কুল উৎপাদনের দিকে বেশি ঝুঁকছে। পরিত্যক্ত জমিতে কুল চাষ করে আর্থিকভাবে সাবলম্বী হচ্ছেন তারা। যতই দিন যাচ্ছে কুলের আবাদ ততই বাড়ছে।
গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার পল্লীতে বাণিজ্যিকভাবে আবাদ হচ্ছে হাইব্রিড জাতের কুল। আগে আপেল কুল ও বাউ কুলের চাষ হলেও এখন নতুন জাত কাশ্মীরি আপেল কুল ও বল সুন্দরী কুলের চাষ বেড়েছে। নতুন জাতের এই কুলের গাছে থোকায় থোকায় কাশ্মীরি আপেল কুল ও বল সুন্দরী কুলে বাগান ভরে গেছে।
প্রচলিত আপেল কুল ও বাউ কুলের চেয়ে আকারে বেশ বড় এই কাশ্মীরি আপেল কুল ও ভারতীয় জাতের বল সুন্দরী কুল। নতুন এ জাতের কুল চাষ করে সফল হয়েছেন অনেকেই।
স্থানীয়ভাবে জাত উন্নয়ন করে উৎপাদিত কুল চাষে উৎসাহ বাড়ছে চাষিদের। সেজন্য আপেল কুল বা বাউকুলের পরিবর্তে গোপালগঞ্জ সদরসহ কাশিয়ানী, মুকসুদপুর, টুঙ্গিপাড়া কোটালীপাড়া উপজেলায় বাড়ছে কাশ্মিরী কুল ও বল সুন্দরী কুলের চাষ। কাশ্মিরী বা বল সুন্দরী কুল আকারে বড়, অধিক রসালো, মিষ্টি, পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং ফলনও হয় বেশি। আবার এতে কীটনাশক প্রয়োগ কম করতে হয়। পোকার উপদ্রব কম। ফলনও বেশি, খেতেও সুস্বাদু। তাছাড়া পরিচর্যাও সহজ।
শীত মৌসুমের অন্যতম এ দেশী ফসল। অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে লাভজনক সুস্বাদু ফল কুল চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে কুল চাষিরা। দৃষ্টিনন্দন, সুস্বাদু কাশ্মিরী কুল ও বল সুন্দরী কুলের এবারও ছেয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই এ ফল ছড়িয়ে যাবে হাটবাজারে। তাই গোপালগঞ্জের ফল চাষিরা এই কুল উৎপাদনের দিকে বেশি ঝুঁকছে।
দেশি ফল হিসেবে বরইয়ের চাহিদা সব সময়ই থাকে তুঙ্গে। আপেল কুল, বাউকুলসহ এবার অন্যতম কাশ্মীরি ও বল সুন্দরী জাতের কুল চাষ করছেন। মাত্র চার মাসের ফসল। বছরে ফলন পাওয়া যায় তিনবার। এতেই কৃষকের ঘরে ঢোকে লাখ লাখ টাকা। তাই বছর বছর বাগান বাড়ছেই। কুলে কপাল খুলছে চাষিদের। কুলেই জীবন বদলের স্বপ্ন দেখছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় জানান, এ জেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। গোপালগঞ্জে এ কুলের আবাদ হচ্ছে বাণিজ্যিকভিত্তিতে। অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে লাভজনক বেশি। এ কারণের চাষিরা এদিকে ঝুঁকছে।
সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে এ কুলের আবাদ করলে চাষিরা একদিন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। অপরদিকে পুষ্টিকর ফলের চাহিদাও পূরণ হবে। দারিদ্র বিমোচনে বিরাট অবদান রাখবে।
সুত্রঃ ঢাকাটাইমস