প্রদীপ সাহা,সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর সাপাহার ঐতিহ্যবাহী
জবই বিলের ভাটির দিকে কতিপয় স্বার্থন্নেষী ব্যক্তি মৎস্য আহরণের নামে কৃত্রিম
বাঁধ তৈরী করে স্রোতের গতিবেগক থামিয়ে দেয়ায় উজানের অসংখ্য কৃষকের
প্রায় হাজার বিঘা জমির আমন ফসল অথৈই পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ফসলের
ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সরোজমিনে দেখা গেছে, বিল এলাকা পরিদর্শনে
গিয়ে অসংখ্য আমন আবাদের ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার
সাধারণ কৃষককে হা হুতাশ করতে দেখা গেছে।
এবং মাসনাতলা ঘাটে বিলের উপর দিয়ে নির্মিত রাস্তার বেশ কয়েকটি কালভাটের
নিচে বাঁশের বেড়া ও পলিথিন দিয়ে স্বাভাবিক পানির স্রোত থামিয়ে শুধু একটি
ব্রীজের নিচ দিয়ে বিলের পানি প্রবাহিত করছে।
সেখানেও পানির মধ্যে আবারো বাাঁশের বেড়া দিয়ে বৃহত এলাকা ঘিরে একটি
মাত্র সুরু পয়েন্টে তাদের সুতি জাল বাসিয়ে সেখান দিয়ে পানি প্রবাহিত
করছে। এতে করে বিলের উপরিভাগের পানি স্বাভাবিক গতিতে নিচে নামতে না
পেরে ওই এলাকায় বিশাল পানির চাপ পড়ে পানি নিচের তুলনায় উপরিভাগে
অনেকাংশে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে উঠেছে।
এবিষয়ে বিলে কৃত্রিম বাঁধ সৃষ্টিকারী ও মৎস্য আহরণকারী ইউপি সদস্য ইসমাইল
এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিলের মৎস্য সংরক্ষন করতে প্রতিবছরই এধরনের
ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। আর এজন্য মৎস্যচাষ প্রকল্পের উন্নয়নে সরকারীভাবে
মৎস্য অফিস হতে জবইবিল মৎস্যচাষ প্রকল্পের নামে ২ লক্ষ ২৫হাজার টাকা জমা দিয়ে
আমরা মৎস্য আহরণ করে থাকি। আমাদের কৃত্রিম বাঁধের কারণে পানি প্রবাহ
বাধাগ্রস্থ হয়নি নিচের সুইচ গেটের কারণেই মুলত স্বাভাবিক পানি প্রবাহ
বাধাগ্রস্থ্য হয়েছে।
এব্যপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রুজিনা আক্তার এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন,
হাপানিয়া এলাকায় পূর্নভবা নদীর সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক একটি
সুইচ গেট নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে ওই সুইচ গেটের দরজাগুলি বন্ধ
রয়েছে। বৈদ্যুতিক সংযোগ না থাকায় দরজাগুলি খোলা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে
মেনোয়াল পদ্ধতিতে দু’একটি দরজা খোলা হয়েছে সেকারণেই জবই বিলের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সুইচ গেটের সকল দরজা খোলা হলে উপরের পানির চাপ
অনেকাংশে কমে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবুর রহমানের এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন যে
প্রকৃতিগত ভাবেই এবছরে বৃষ্টিপাতের পরিমান অনেক বেশী। প্রচুর বৃষ্টিপাত,
কৃত্রিম বাঁধ ও নিম্নাঞ্চলের সুইচ গেট সমস্যা তিনটি কারণেই বিলের
উপরিভাগের আমন ফসল তলিয়ে গেছে। ¯øইচ গেটের সকল দরজা খুলে দেয়া হলে
বিলের পানি প্রবাহের চাপ অনেকাংশে কমে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কল্যাণ চৌধুরী’র সাথে কথা হলে তিনি
জানান,বিষয়টি আমি জানার পরে মৎম্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করতে এবং কালভাটের মুখে বাঁশের চাঁটাই এবং পলেথিন দেওয়ার কারণে
পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনতি বিলম্বে আমন আবাদকে বাঁচানোর জন্য বিল পাড়ের কৃষকগণ সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।