নিউজ ডেস্কঃ
কৃষিপণ্যের উৎপাদন স্বাভাবিক থাকায় মহামারি করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় ধাক্কা খায়নি। আর তাই কৃষিপণ্যের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে আগামী বাজেটে কৃষিখাতের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এই খাতে কর অব্যাহতি ও ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের।
বাজেট সংশ্লিষ্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষিখাতে নতুন বিনিয়োগ উৎসাহিত করার চেষ্টা রয়েছে সরকারের। কৃষিখাতের সম্ভাবনা কাজে লাগানো, গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করা ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে শাকসবজি, ফলমূল, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং কৃষিযন্ত্র তৈরিতে আগামী অর্থবছরে নতুন বিনিয়োগকারীরা পেতে পারেন ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা।
তারা আরও জানান, আগামী ১ জুলাই থেকে ২০৩০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত যারা এ খাতে বিনিয়োগ করবেন, তারাই আয়কর অব্যাহতির সুবিধা পেতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিনিয়োগ হতে হবে এক কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে বিডার নিবন্ধন নিতে হবে। কাঁচামাল হতে হবে সম্পূর্ণ দেশে উৎপাদিত। উৎপাদনকারী কারখানার পরিবেশ বা পণ্যের মানের কারণে শাস্তি পেলে এ সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে।
জানা গেছে, দেশে প্রচুর ফল ও সবজি উৎপাদন হলেও তা প্রক্রিয়াজাত করে অধিকতর মূল্য সংযোজনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। শুধু তাজা ফল ও সবজি রফতানি হচ্ছে। একইভাবে দুধ প্রক্রিয়াজাত করে দুগ্ধজাত পণ্য তৈরিও হচ্ছে কম। এ জাতীয় পণ্য তৈরিতে বিনিয়োগকারীকে প্রথম ১০ বছর কর অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে।
এনবিআর-এর কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষিখাতে কর অব্যাহতি থাকলেও মৎস্য চাষের আয়ে কর বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। মাছ চাষে ৩০ লাখ টাকার বেশি আয় করলেই তার ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হতে পারে। আসন্ন বাজেটে অর্থমন্ত্রী এ প্রস্তাব করবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মৎস্য চাষ থেকে আয়ের ওপর কর কম থাকায় অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের অন্য খাতের আয়কে মৎস্য খাতের আয় হিসাবে দেখান। এতে তাদের আয়কর দিতে হয় কম। কারণ, ব্যক্তি আয়করের সর্বোচ্চ হার ২৫ শতাংশ।
বর্তমানে আইনে মৎস্য খাতে আয়ের প্রথম ১০ লাখ টাকার ওপর কোনও আয়কর দিতে হয় না। পরবর্তী ১০ লাখ টাকা আয়ে ৫ শতাংশ এবং ২০ লাখের পরে যে আয় হয়, তাতে ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়।
এনবিআর থেকে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে মাছচাষের আয়ের প্রথম ১০ লাখ টাকা করমুক্ত থাকবে। পরের ১০ লাখে ৫ শতাংশ এবং পরের ১০ লাখে ১০ শতাংশ কর অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ৩০ লাখ টাকার পরে কোনও আয় থাকলে সেখানে ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, আগামী বাজেটে এনবিআর-এর লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হচ্ছে না বললেই চলে। লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হচ্ছে তিন লাখ ৩০ হাজার ৭৮ কোটি টাকার। চলতি বাজেটে দেওয়া আছে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা। বাড়ছে মাত্র ৭৮ কোটি টাকা। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে রাজস্ব আয় বড় ধাক্কা খেয়েছে। উল্লেখ্য, অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব আদায় হয়েছে এক লাখ ৫১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।
সুত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন