সবুজ আলী আপন,লালমনিরহাট

বন্যা পরবর্তী ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া, প্রতিইঞ্চি জমির ব্যবহারে নির্দেশনা পালন, কৃষক উন্নয়নে গৃহীত নানা কর্মযজ্ঞ ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে গৃহীত নানা উদ্যোগ আর কর্মতৎপরতায় এগিয়ে চলছে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষি কার্যক্রম।


উপজেলা কৃষিবিভাগের উদ্যোগে আপদকালীন বীজতলা হিসেবে ৪ শ ১৬টি ট্রেতে তৈরী করা হয় রোপা আমন চারা যা রাইস ট্রান্সপ্লানটারের মাধ্যমে রোপন করা হয় ১৬ বিঘা জমিতে ফলে সাশ্রয় ও সুবিধা পান কৃষকরা। স্থাপন করা হয়েছে বিআর-২২ নাভী জাতের ধানের ৫০ শতক জমির কমিউনিটি বীজতলা যা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৩৩ জন কৃষকের মাঝে বিতরন করা হবে। এছাড়াও কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে ২০টি ভাসমান বেডে উৎপাদিত আমন চারা এবং  ৬০জন কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে মাশকলাইয়ের বীজ ও রাসায়নিক সারও।
প্রতিইঞ্চি জমির ব্যবহার, পারিবারিক পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে উপজেলার ২শ ২৪টি বসতবাড়ীতে ১শতক করে জমিতে স্থাপন করা হয়েছে সব্জি বাগান। এতে দেয়া হয়েছে ১৪ প্রকারের বীজ, চারা এবং ঘেরা দিতে দেয়া হয়েছে কিছু আর্থিক সহায়তাও। বিভিন্ন দপ্তরের পতিত জায়গাসহ স্কুল কলেজের মাঠেও এ ধরনের উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরাও নিরাপদ সব্জি চাষ শিখছে এবং তাদের বিনোদনসহ শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটছে।
ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি,বালাই ও আগাছা ব্যবস্থাপনায় কৃষিবিভাগের রয়েছে ধানের চারা লাইন করে লাগানোর এবং বাঁশের কঞ্চি বা গাছের ডাল পুঁতে পার্চিং করার পরামর্শ। পার্চিং পরামর্শে পাখি এসে ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফেলায় তা দমনে কীটনাশকের ব্যবহার কমে যাচ্ছে এবং পরিবেশও ভালো থাকছে। মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমাতে গুরুত্ব পাচ্ছে জৈবসার,ভার্মিকম্পোস্ট জাতীয় সার প্রয়োগের বিষয়টিও। পারিবারিক চাহিদা মেটাতে স্বল্প পরিসরে ১ শ ৫০টি বাড়ীতে নেয়া হয়েছে বস্তায় আদা চাষের উদ্যোগ। উপজেলায় বেড়েছে আউশের আবাদ,পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলা জাতীয় ফসলের। ভুট্টা,সূর্যমুখী সহ বিভিন্ন লাভজনক ফসল চাষে আগ্রহী করে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে তামাক চাষেও। এ লক্ষে মার্কেট লিংকেজেও কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষিক্ষেত্রে কালীগঞ্জ একটি ব্যাপক সম্ভাবনাময় এলাকা। এখানে শষ্যের নিবিড়তা ২২৫ ভাগ,কিছুকিছু ক্ষেত্রে বছরে ৪ বার ফসল নেয়ারও সুযোগ রয়েছে। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কালীগঞ্জে কৃষির ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন ও বাণিজ্যিকীকরনেরও রয়েছে সুযোগ।
সর্বোপরি উপজেলায় গঠিত বিভিন্ন কৃষকগ্রুপের মাধ্যমে কৃষকদের নিয়ে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দা সিফাত জাহানের আন্তরিক নেতৃত্বে নিরলস কাজ করে চলছে  কালীগঞ্জের কৃষিবিভাগ যা এ অঞ্চলের কৃষির উন্নয়নে নতুনত্ব আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *