" কৃষি অন্বেষণ"পর্ব-০২#বিষয়ঃ সীতা লাউ" কৃষি অন্বেষণ"পর্ব-০২#বিষয়ঃ সীতা লাউ

কৃষিবিদ কামরুল ইসলাম

© সীতা লাউ একটি বহুবর্ষজীবী লতানো উদ্ভিদ।বারি সীতা লাউ-১ জাতটি ২০১০ সালে অনুমোদন করা হয়।
© একবার রোপণের পর প্রায় ১৫ বছর পর্যন্ত একই লতা থেকে ১২ মাস পাওয়া যাবে সবুজ লাউ। তাই পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে বসতবাড়ির আংগিনায় লাগানোর জন্য অত্যন্ত উপযোগী একটি জাত।
© চারা লাগানর ৫-৬ মাস পর ফুল আসে। ৩০ দিন পর ফল সবজি হিসাবে খাওয়ার উপযোগী হয়। সারা বছর ফল দিতে থাকে।
© ৫-৭ বছরের একটি গাছ থেকে ২০০ টি ফল পাওয়া যাবে। গড়ে প্রতিটি ফলের ওজন ৭৫০ গ্রাম হয়। যেহেতু গাছ ১০-১৫ বছর বেঁচে থাকে এবং ফল দেয় তাই মজবুত মাচা তৈরি করতে হবে
মাটির ধরনঃ
—————–
উর্বর দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি এবং পানি নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত স্থান সীতা লাউ চাষের জন্য সবচেয়ে বেশী উপযুক্ত। শীত লাউ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না।
উৎপাদন পদ্ধতিঃ
———————-
সীতা লাউ বীজ বা শাখা কাটিং এর মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা যায়।
রোপণ পদ্ধতিঃ
——————–
জমিতে সারি থেকে সারি ০৩ মিটার এবং গাছ থেকে গাছ ০৩ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে চারা রোপণ করতে হয়।
রোপণের সময়ঃ
———————
যদিও লাগানোর উপযুক্ত সময় জুন- জুলাই মাস, তবে সারা বছরই লাগানো যায়।
© শীতকালীন লাউ চাষের জন্য সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে বীজ বপন করতে হয়। তবে আগাম শীতকালীন ফসলের জন্য আগস্টের মাঝামাঝি সময়েও বীজ বপন করা যায়।
বীজ বপনের গভীরতা:
——————————-
২.০-২.৫ সেন্টিমিটার হতে হবে। ৪-৫ দিনের মধ্যেই চারার অঙ্কুরোদ্গম হবে ৷
সার প্রয়োগঃ
—————-
মাদা প্রতি গোবর ( ভার্মি কম্পোস্ট উত্তম) সার ১০ কেজি, ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ৪০০ গ্রাম, এমওপি ৩০০ গ্রাম ও বোরন সারব ০২ গ্রাম হারে দিতে হয়।
© সমুদয় গোবর, টিএসপি, অর্ধেক এমওপি, বোরন, এবং এক পঞ্চমাংশ ইউরিয়া মাদা তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে । বাকি এমওপি এবং ইউরিয়া ৪ কিস্তিতে বছরে প্রয়োগ করতে হবে ।
বিশেষ পরিচর্যাঃ
———————–
© যেহেতু এই ফসলটি ১০-১৫ বছর বেঁচে থাকে এবং ফল দিতে থাকে সুতরাং মজবুত মাচা তৈরি, প্রুনিং ( ছাঁটাই) এবং ফলের আকৃতি ঠিক রাখতে কয়েকবার বোরন সার দিতে হবে।
© লাউগাছ প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করে। তাই নিয়মিত গাছের গোড়ায় সেচ দেয়া, মাটির চটা ভেঙে দেয়া, বাউনি দেয়া ও গাছের গোড়ার শাখাগুলোও ভেঙে দেয়া বাঞ্ছনীয়।
ফল সংগ্রহ ও ফলনঃ
—————————–
ফুল ফোটার ২৫-৩০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায় এবং হেক্টর প্রতি ফলন ৩০-৩৫ টন।
© সব চাইতে মজার বিষয় হলো এটা কাঁচাতে সবজি হিসাবে খাওয়া যায়, পেকে গেলে ফল হিসাবে খাওয়া যায়, আর বীজগুলো শরবতের সাথে খাওয়া যায়।
® ছাদ বাগানে লাগানোর জন্য এইটা খুবই ভালো একটা জাত।
® কৃষি বিষয়ক যে কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট করুন।
© “কৃষি অন্বেষণ” পরিবার কৃষি বিষয়ক জ্ঞান অর্জনের উন্মুক্ত প্লাটফর্ম। তাই ” কৃষি অন্বেষণ” পেইজে যুক্ত হবার অনুরোধ রইলো।
** বারি উদ্ভাবিত সবজি ফসল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
ড. এ কে এম কামরুজ্জামান
উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা
সবজি বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বারি, গাজীপুর
মোবাইল ০১৭৫৪১১২০৫০
যোগাযোগ করে দেখতে পারেন।

কৃষি বিষয়ে আপনাদের যে কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
যোগাযোগ————-
কৃষিবিদ কামরুল ইসলাম
৩৫ তম বিসিএস কৃষি
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার
পুঠিয়া, রাজশাহী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *