কেশবপুরে আখ চাষের দিকে ঝুকছেন কৃষকরাকেশবপুরে আখ চাষের দিকে ঝুকছেন কৃষকরা

মোরশেদ আলম,যশোর প্রতিনিধি

যশোর কেশবপুরে এবার আখ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। এই কারনে ধান চাষ থেকে আখ চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় আখ চাষে ঝুঁকছেন কেশবপুরের কৃষকরা। বর্ষার শুরুতে আখ চাষ করে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও বেশ ভাল। উৎপাদিত আখের আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি আখ চাষিরা। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অর্থায়নে কেশবপুরে আখ চাষ জোরদার করণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা আখ চাষ করেছেন। এ ছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে আখ চাষ করেছেন বলে জানা গেছে। আখ চাষের অধিকাংশ জমিই আনাবাদী ছিল। কিছু ধান চাষের জমিতে আখের এ বাম্পার ফলনে অনেক চাষী আখ চাষে ঝুকছেন।
এলাকার আখ চাষিরা জানায়,কেশবপুরে আনাবাদি জমিতে আখ চাষ শুরু করেছেন এলাকার কৃষকরা। ধান চাষে অমানুষিক পরিশ্রম, মূলধন বেশি লাগার কারণে অনেক কৃষকই ধান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। একই সঙ্গে তারা ধানের বিকল্প ফসল চাষের চেষ্টা চালাচ্ছেন। যেসব কৃষক ধান চাষ করতেন তাদের অনেকেই এখন আখসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।

কেশবপুরে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর কেশবপুরে ১ হাজার হেক্টর (৭ শত ৫০ বিঘা) জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে । এর মধ্যে লতারি জবা আখ, মিছড়ি দানা আখ,বাশ টেনাই আখ,সূর্য মুখী আখ,ইশ্বরদী এন১৬ আখ জমিতে চাষ করা হয়েছে।

এ ছাড়া কৃষকরা আখক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে আলু, গাজর ও ফরাশসিম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। আখক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ আরও কয়েকটি কৃষি ফসল চাষে কেশবপুরে কৃষি বিভাগ প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে কেশবপুরে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে বলে জানা গেছে। কেশবপুরে মাটি ও আবহাওয়া আখ চাষের উপযোগী এবং জলাবদ্ধতা না থাকায় চলতি মৌসুমে আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি হেক্টর আখ চাষে কৃষকের খরচ হয়েছে ২ লাখ টাকা। আর প্রতি হেক্টরে উৎপাদিত আখ ১০ থেকে ১১ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে।সাগরদাড়ী ইউনিয়নের আখ চাষী মনির মিয়া জানান, তিনি প্রায় ১০ শতক জমিতে মিছড়ি দানা জাতের আখ চাষ করেছেন। তার মোট ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। বিক্রয় মূল্য পাচ্ছেন ৮০ হাজার টাকা। আগে এসব ভূমিতে ধান চাষ করে তিনি খরচ বাদ দিয়ে ৫ হাজার টাকাও লাভ করতে পারতেন না।গড়ভাঙ্গা এলাকার আখ চাষি রহমাতুল্লাহ জানান, তিনি ২ লাখ টাকা খরচ করে আখ চাষ করেছেন। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা বিক্রি করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তিনি।

কেশবপুরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা জানান, বেলে-দো আঁশ থেকে শুরু করে এঁটেল পর্যন্ত সব মাটিতেই আখ চাষ করা সম্ভব হলেও পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থাযুক্ত এঁটেল-দোআঁশ মাটি আখ চাষের জন্য সর্বোত্তম। তিনি বলেন, কেশবপুরের জমিতে আখ চাষের অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *