মোরশেদ আল,যশোর প্রতিনিধি
যশোর কেশবপুরে মাল্টা ও কমলা চাষ করে সাফল্যর মুখ দেখেছে আব্দুস সেলিম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা অনেকটা বেশি। ইতিমধ্যে অনেক গাছেই মাল্টা ও কমলা ধরেছে।
কিছুদিন গেলেই মাল্টা ও কমলা বিক্রি শুরু হবে। নার্সারী মালিক আব্দুস সেলিমের দীর্ঘ ৪ বছরের শ্রম স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট পাথরা গ্রামে মাল্টা বাগানটিতে পরিদর্শন করেছিলেন কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা।
এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনির হোসেন। সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত নওয়াব আলী সরদারের ছেলে আব্দুস সেলিম পেশায় একজন নার্সারী ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি ২০১১ সাল থেকে এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত।
নিজের জমিসহ অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তার নার্সারীর ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার সুবাদে ২০১৬ সালে তার পরিচয় ঘটে মনিরামপুর উপজেলার মুজগুন্নি গ্রামের মাল্টা চাষী আব্দুল করিমের সাথে। তার ক্ষেতের মাল্টার ফলন দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেন মাল্টার আবাদ চাষ করার। তারই অনুপ্রেরণাই ও পদ্ধতিতে ওই বছরই তার ক্ষেত থেকে ৭০ পিচ চারা কিনে এনে তিনি ক্ষেতে রোপণ করে পরিচর্যা শুরু করেন।
নার্সারী মালিক আব্দুস সেলিম জানান, পর পর তিন বছর নার্সারী ব্যবসায় লাভ না হওয়ায় তিনি ভিন্ন কিছু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মাল্টা চাষের পরিকল্পনা গ্রহন করেন। করিম ভাইয়ের দিক নির্দেশনায় তিনি মাল্টা চাষ করে সফল হয়েছেন। তার ক্ষেতের উৎপাদিত চারার কোন রোগ বালাই নেই বললেই চলে। চারা রোপণের পর থেকে নিয়মিত পরিচর্যা করায় ২ বছরের মাথায় প্রতিটি গাছে অসংখ্য মাল্টা ধরেছে। তার ক্ষেতের কমলা সুস্বাদু।
প্রতিটি গাছে ৩‘শ থেকে ৪‘শ পিচ মাল্টা ধরেছে। প্রতি কেজী মাল্টা ১‘শ থেকে ১‘শ ৫০ টাকা কেজী দরে বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন। তার নার্সারীতে মাল্টা বারী -১, চায়না কমলা, মাল্টা, ভেরাকাটা মাল্টা, ঝুরি কমলা, নাগপুরি কমলা, ছাতকী কমলাসহ হরেক রকমের ৭ হাজারের মত চারা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তিনি শুধু একজন মাল্টা চাষী নন, মাল্টার চাষ সম্প্রসারণেও তিনি ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার নার্সারীর উৎপদিত কমলা ও মাল্টার চারা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ৮টি বাগান করতে উৎসাহিত করেছেন।
তার অনুপ্রেরনায় উপজেলার সন্ন্যাসগাছা গ্রামের আবু হুরাইরা, একই গ্রামের মিজানুর রহমান, আব্দুল আজিজ, ভেরচি গ্রামের আরাধন কুন্ডু ও সাতাইশকাটি গ্রামের আক্তার হোসেন মিঠুর কমলা ও মাল্টা বাগান উল্লেখযোগ্য।
তিনি এ আবাদ উপজেলা ব্যাপী সম্প্রসারণেও ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় বারী -১ জাতের মাল্টা খুবই উপযোগী।
খেতেও খুব সুস্বাদু। এ জাতের কমলা ও মাল্টা আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ভালো ফলন পেতে হলে প্রথমে মাদা করে তার মধ্যে কেঁচো সার, ফসফেট, এমওপি সার প্রয়োগ করার পর চারা রোপণ করতে হবে।