কোরবানির মাংস সংরক্ষণে করোনা ঝুঁকি! কি করা উচিৎকোরবানির মাংস সংরক্ষণে করোনা ঝুঁকি! কি করা উচিৎ

নিউজ ডেস্কঃ
প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে গরু ও ছাগলসহ লাখ লাখ গবাদিপশু কোরবানি করা হয়। পশু জবাইয়ের পর ধর্মীয় রীতি অনুসারে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও গরিব মানুষের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ বন্টন করে দেয়ার পর অনেক পরিবারেই কোরবানির মাংস ডিপ ফ্রিজে রেখে দেয়া হয়, যাতে করে অনেকদিন রেখে খাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমান মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ডিপ ফ্রিজে কোরবানির মাংস সংরক্ষণে করোনা ঝুঁকি থাকবে বলে আভাস দিয়েছেন রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে পশুর হাট বসা, গ্রামের বাড়িতে যাওয়া, একই কসাইয়ের একাধিক পশু জবাই করা, মুখে মাস্ক না পরা ও নির্দিষ্ট শারীরিক দূরত্ব না মেনে মাংস বন্টন করা ইত্যাদি কারণে সংক্রমণ বাড়তে পারে। সরাসরি মাংসতে করোনাভাইরাস না থাকলেও করোনা আক্রান্ত রোগী কিংবা উপসর্গ নিয়ে বা উপসর্গবিহীন কেউ গরুর মাংস ধরলে তার মাধ্যমে মাংসে করোনাভাইরাস থাকার ঝুঁকি তৈরি হবে।

রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমিত মাংস ফ্রিজে রাখলে দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৮ থেকে ১০ দিন এবং ডিপ ফ্রিজের ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভাইরাসটি দুই বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। ফলে অন্যান্য বছরের মতো ডিপ ফ্রিজে কোরবানির মাংস অনেকদিন রেখে খেলে এর মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবে।

দেশে এবার কোরবানিযোগ্য মোট পশুর সংখ্যা এক কোটি ৯ লাখ ৪২ হাজার ৫০০। রাজধানীসহ সারাদেশে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির হাট বসবে। কিন্তু এ হাট বসলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোশতাক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘কোরবানির পশুর হাট বসলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্যান্য বছর মানুষ জবাইকৃত কোরবানির পশুর মাংস ফ্রিজে রেখে খেতে পারলেও এবার মাংস ফ্রিজে রাখলে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।’

কীভাবে এই ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন এই বিজ্ঞানী। তিনি বলেন, ‘কোরবানির পশু জবাই ও কাটাকাটির সঙ্গে যারা থাকবেন তাদের মধ্যে উপসর্গবিহীন করোনা রোগী থাকতে পারে। তার হাতের স্পর্শে মাংসে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। এমনটা হলে ডিপ ফ্রিজে করোনাভাইরাস দুই বছর পর্যন্ত যেকে যাবে।’এই অবস্থায় এবার কোরবানির মাংস ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে খাওয়ার চেয়ে চুলায় রান্না করে ডেকচিতে রেখে খাওয়াই নিরাপদ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *