খেতের আইলে ঘাসের বেড়াখেতের আইলে ঘাসের বেড়া

নিউজ ডেস্কঃ
১৬ শতক জমিতে পেয়ারার চাষ করেছিলেন কৃষক বাবু মণ্ডল। পেয়ারার চারা রোপণের সঙ্গে সঙ্গে খেতের আইলে নেপিয়ার ঘাসের চারা রোপণ করেন। ঘাসের গাছগুলো দেড়-দুই ফুট লম্বা হলে বাঁশ দিয়ে বেঁধে দেন। এভাবে ঘাস হয়ে উঠে ফসল রক্ষার বেড়া।

বাবু মণ্ডল বলেন, পেয়ারা বিক্রি করে টাকা পেয়েছেন। তেমনই আইলে থাকা ঘাসও বিক্রি করেছেন। কিছু ঘাস বাড়ির গরু-ছাগলের খাবার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এখনো খেতের আইলে ঘাস রয়েছে।

বাবু মণ্ডলের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা। তাঁর মতো উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকেরা খেতের ফসল রক্ষায় বেড়া হিসেবে নেপিয়ার ঘাস বেছে নিয়েছেন।

কৃষি বিভাগও বলছে, নেপিয়ার ঘাসের বেড়া বেশ ভালো উদ্যোগ। এই ঘাস বড় হয়ে উঠলে তা কেটে গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যাচ্ছে।

গত সোমবার কোটচাঁদপুরের লক্ষ্মীপুর, বলুহর, ফুলবাড়ি, এলাঙ্গী প্রভৃতি এলাকার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য খেতের চারপাশে নেপিয়ার ঘাসের বেড়া। এর মধ্যে নানা ধরনের সবজির খেত।

লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে কথা হয় কৃষক বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এলাকায় নেপিয়ার ঘাসের চাষ শুরু হয়েছে ১৫-১৬ বছর। প্রথমে ফুলবাড়ি এলাকায় এই চাষ শুরু হয়। বর্তমানে গোটা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।

সাব্দালপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, নেপিয়ার ঘাস বছরে অন্তত তিনবার বিক্রি করা হয়। এক বিঘা জমির ঘাস বিক্রি করে বছরে ৩০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। খরচ বাদে ২০ হাজার টাকা লাভ থাকে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর কোটচাঁদপুর উপজেলায় ১ হাজার ৩০০ বিঘা জমিতে এই ঘাসের চাষ হয়েছে।

বলুহর গ্রামের কৃষক বজলুর রহমান দুই বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছেন। সেই জমিতে ঘাস দিয়ে বেড়া দিয়েছেন। বজলুর রহমান বলেন, প্রথমে ঘাসের চারা রোপণ করতে হয়। অল্প সময়ে এটা বেড়ে ওঠে। দেড় থেকে ২ ফুট লম্বা হলেই বাঁশ দিয়ে বেঁধে দিতে হয়। এরপর ঘাসের গাছগুলো শক্ত হয়ে যায়। গরু-ছাগলে নষ্ট করতে পারে না। তবে এই ঘাসের পাতা গরু-ছাগলের খাবার হিসেবে ব্যবহার হয়।

আরেক কৃষক সামাউল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর আগে কয়েকজন কৃষক জমির আইলে এই ঘাস রোপণ করেছিলেন। পরে অনেকে ঘাসের বেড়া তৈরি করেছেন। এখন মাঠের পর মাঠ এই ঘাসের বেড়া দেখা যায়।

কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাসিন আলী বলেন, ঘাস দিয়ে বেড়া তৈরির বিষয়টি তাঁরা দেখেছেন। এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। কৃষক এতে লাভবান হচ্ছেন। খেতের ফসল রক্ষার পাশাপাশি কৃষকেরা জমির আইল থেকে পশুখাদ্য পেয়ে যাচ্ছেন।

সুত্রঃপ্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *