বর্তমান সময়ে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন সি-এ ভরপুর ফল-সবজি খাওয়ার কথা বেশি করে বলা হচ্ছে৷ আর আপনারা জানেন কামরাঙার মধ্যে এই ভিটামিন সি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে৷ তাই খাদ্যতালিকায় কামরাঙা রাখলে তা শরীরের পক্ষে উপকারী৷
বাংলাদেশ,ভারত, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই কামরাঙা পাওয়া যায়৷ এটি Starfruit নামেও পরিচিত৷ এই ফল দৈর্ঘ্যে প্রায় ২-৬ ইঞ্চির হয়ে থাকে৷ উপবৃত্তাকার আকৃতির এই ফলে সাধারণত পাঁচটি শিরার মতো ঢাল থাকে৷ পাকা অবস্থায় এটি হলুদ রঙের হয়৷
কামরাঙার উপকারিতা :
অ্যান্টিঅক্সিডেন্স এবং ভিটামিনে পরিপূর্ণ হওয়ায় এটি আমাদের শরীরকে বহু জটিল রোগের হাত থেকেই রক্ষা করে৷ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এই ফল। এছাড়া, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, দাঁত, মাড়ি, হাড় মজবুত করতেও সাহায্য করে এটি৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও যেমন বৃদ্ধি করে তেমনই ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় এবং ব্রণর সমস্যা কমায়।
কামরাঙা গাছ অনেকের বাড়িতেই দেখা যায়৷ এই কামরাঙার চাষ খুব একটা কঠিন বা শ্রমসাধ্য নয়৷ এমনকি বাড়ির ছাদেই (Terrace Farming) এটি ফলানো সম্ভব৷ সারাবছর এবং সব ধরণের মাটিতেই এর চাষ সম্ভব৷ এটি ১২ ইঞ্চির টবেও চাষ করা যেতে পারে, আবার ২০ ইঞ্চির ড্রামেও এর ফলন ভালোই হবে৷ কলমের চারাগাছ রোপনের পর থেকে মাত্র ৬ মাস সময় লাগে কামরাঙা পেতে৷
প্রথমে বেলে-দোআঁশ মাটির সঙ্গে একভাগ গোবর সার, এবং সেই সঙ্গে পটাশ সার মিশিয়ে প্রায় ২ সপ্তাহ ভেজা ভেজা অবস্থায় রাখতে হবে৷ এরপর মাটি ঝুরঝুরে করে নিয়ে তা টবে ভরতে হবে৷ টবের নীচে একটি ছিদ্র করে দিতে হবে যাতে অতিরিক্ত জল বের হয়ে যায়৷ এরপর ওই মাটি টব বা ড্রামে ভরতি করে চারা গাছটি রোপন করতে হবে এবং তার গোড়ায় মাটি একটি উঁচু করে দিতে হবে যাতে কোনওভাবেই চারাগাছটি নেতিয়ে না পড়ে৷
চারাগাছ রোপনের পর প্রতিদিন প্রয়োজন মতো জল দিতে হবে, তবে কোনওভাবেই তা যেন অতিরিক্ত না হয়ে যায় তা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে৷ মাঝে মাঝে টবের মাটি একটু খুঁচিয়ে দিতে হবে, তবে গাছের গোড়ায় যেন আঘাত না লাগে৷ সেই সঙ্গে আগাছা হলে তা পরিষ্কার করতে হবে দেরি না করে৷ চারাগাছ রোপনের কয়েক মাস পরে সরিষার খৈল পচা জল গাছের গোড়ায় দিতে হবে৷ সেই অর্থে রোগবালাই-এর সমস্যা কামরাঙা গাছে দেখা যায় না৷ তাই পরিশ্রমও কম করতে হয়৷
কামরাঙার ব্যবহার:
পাকা কামরাঙা ভালো করে ধুয়ে কেটে খাওয়া যেতে পারে৷ এর চাটনি করে থাকেন অনেকে৷ অনেকে স্যালাডে ব্যবহার করেন৷ আবার খাবার গার্নিশ করতেও কামরাঙা ব্যবহার করা হয়৷ এছাড়া, কেউ কেউ কামরাঙার রস রূপচর্চার ক্ষেত্রেও কাজে লাগান৷ এই ফলের রস নিয়ে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করে কিছুক্ষণ পরে জল দিয়ে ধুয়ে দিলে ত্বক পরিষ্কার হয় বলে অনেকের কাছেই এই ফলের গুরুত্ব অনেকখানি৷