ঘুরে আসুন ভুতিয়ার পদ্মবিলঘুরে আসুন ভুতিয়ার পদ্মবিল

নিউজ ডেস্কঃ
ফুটেছে অগণিত ফুল, পদ্মপাতার ওপরে টলমল করছে পানি, ছোট ছোট পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে আপন মনে। হোগলাবন, কচুরিপানার মধ্য দিয়ে ছোট ডিঙি নৌকায় এগিয়ে যেতে যেতে এমন দৃশ্য মনে দোলা দেয়। পদ্মফুলই যেন দর্শনার্থীদেরকে স্বাগত জানায়

খুলনার তেরখাদা উপজেলার ভুতিয়ার বিল শেওড়া ও আগাছায় ভরা। এরইমধ্যে প্রতি বর্ষার মত চলতি বছরও ফুটেছে লাখ লাখ পদ্মফুল। এতে দর্শনার্থী ও সাধারণ মানুষের আনাগোনাও বেড়েছে। দূর-দুরান্ত প্রতিদিনই আসছে অসংখ্য মানুষ। তাই বাস ও অন্যান্য যানবাহনসহ বিলে নৌকার কদর বেড়েছে। এভাবেই ভুতিয়ার বিলের পদ্ম ফুলের কারণে মৌসুমী কর্মসংস্থান চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ভুতিয়ার বিলটির আয়তন প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে মাত্র ৪০-৫০ হেক্টর জমিতে পদ্ম ফুল ফোটে। বাকি বিল জুড়ে হোগলা, শেওলা আর আগাছা। এই পদ্ম ফুলের টানে প্রতি বছর অনেক দর্শনার্থীই এখানে ঘুরতে আসনে। তাই এ এলাকা জুড়ে স্থানীয়দের মাঝে মৌসুমী কর্মসংস্থান চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

স্থানীয়রা জানান, আগেকার দিনে কোনো বিয়ে-শাদীতে বা মেজবানে ডেকোরেটরের ভাড়া করা থালা-বাসন মিলতো না। সে সময় অতিথি আপ্যায়ণ করা হতো পদ্ম পাতায়। শুধু পদ্ম আর পাতাই নয়, দেশি মাছের ভান্ডার ছিল পদ্মবিল। কৈ, শিং, মাগুরের মজুদ থাকতো এখানে। শীতে পানি কমতেই পলুই, কোচ আর হাতড়িয়ে মাছ ধরতে জলে নেমে পড়তো সবাই। চারদিকে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়তো সে সময়।

ভুতিয়ার বিলে ঘুরতে আসা ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ডিঙি নৌকায় পানির শব্দের তালে পদ্ম ফুল স্পর্শ করে আলাদা একটা অনুভূতি হয়। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন রঙের মেলা বসেছে। শরতের এমন দিনে আকাশে ভাসমান মেঘ, নীচে দিগন্ত জোড়া পদ্মফুলের মেলায় হারিয়ে যেতে চায় মন। এমন মনোরম পরিবেশ তেরখাদা ভুতিয়ার বিলে।

পদ্মফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা সুমাইয়া রহমান আখি জানান, পদ্ম ফুলের কারণে বিলটির প্রাকৃতিক সৈন্দর্য বহুগুণে বেড়ে গেছে। ফুটেছে অগণিত ফুল, পদ্মপাতার ওপরে টলমল করছে পানি, ছোট ছোট পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে আপন মনে। হোগলাবন, কচুরিপানার মধ্য দিয়ে ছোট ডিঙি নৌকায় এগিয়ে যেতে যেতে এমন দৃশ্য মনে দোলা দেয়। পদ্মফুলই যেন দর্শনার্থীদেরকে স্বাগত জানায়।

খুলনা-৪ আসনের সাংসদ আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানান, “নির্বাচনী এলাকা তেরখাদায় কোনো শিল্প কল-কারখানা নেই। এখানের মানুয়ের প্রধান আয়ের উৎস কৃষি, মৎস্য এবং ব্যবসা। ভুতিয়ার বিল নিয়ে সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হবে। ভুতিয়ার বিলের পদ্ম ফুলে সৌন্দর্য দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসে। ফলে এখানের মানুষের আয়ও বেড়ে যায়। বেড়ে যায় তেরখাদার সুনাম।”

যেভাবে যাবেন

খুলনা শহরের জেলখানা ঘাট পার হয়ে প্রায় ১৮ কিলোমিটার পর তেরখাদা বাজার। বাস বা টেম্পুতে সেখানে যাওয়া যায়। তেরখাদা বাজারে নেমে ইজিবাইক যোগে চরকুশলা গ্রামের পদ্ম বিল পৌঁছানো যাবে। খুলনা শহর থেকে বিলে পৌঁছাতে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।

পদ্ম বিলে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। পুরো পদ্ম ফুলের এলাকাটা নৌকায় ঘুরিয়ে দেখাতে ভাড়া ২০০ থেকে ৫০০ টাকা লাগে। ছোট নৌকাগুলোতে ধারণ ক্ষমতা ২-৩ জনের।
সুত্রঃঢাকা ট্রিবিউন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *