চরের কুমড়ায় সুদিনের স্বপ্ন গাইবান্ধার কৃষকেরচরের কুমড়ায় সুদিনের স্বপ্ন গাইবান্ধার কৃষকের

নিউজ ডেস্কঃ
গাইবান্ধায় শত শত হেক্টর চরের জমিতে মিষ্টি কুমড়ার বিপুল ফলনে সুদিনের স্বপ্ন দেখছে স্থানীয় কৃষকরা।

কৃষকদের এই কাজে বিনামূল্যে বীজ ও প্রযুক্তিগত পরামর্শ সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর অববাহিকায় চরের বেলেমাটিতে ৪৫০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। কুমড়ার বীজের মধ্যে ‘ব্ল্যাক সুইটি’, ‘মিতালি’, ‘ব্ল্যাক সিটি সেরা’, ‘সোহাগী’ উল্লেখযোগ্য।

‘ইউনাইটেড সিড স্টোর’ কৃষি অধিদপ্তরকে বিনামূল্যে এসব বীজ দিয়ে সহযোগিতা করেছে বলে জানান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের খাঠিয়ামারীর চর বক্লের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চরে দুই থেকে তিন ফুট গভীর করে জৈব সার দিয়ে ৬ থেকে ৮ ফুট পর পর একটি করে গর্ত তৈরি করে নেওয়া হয়। চরে পানি দ্রুত নিচে চলে যায় বলে গর্ত গভীর করতে হয়। এই গর্তে কুমড়ার বীজ জমিতে বপন করতে হয়।
এক বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষে সব মিলে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয় বলে জানান তিনি।

এবার এই জেলার চার উপজেলায় পাঁচ হাজার চারশ কৃষক মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

কুমড়া চাষিরা জানান, বীজ বপনের ৮০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে কুমড়া বিক্রি করা সম্ভব হয়। মার্চ-এপ্রিল মাসে ক্ষেত থেকে কুমড়া তুলে বিক্রি করা যায়।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমির উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হবে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।

একই ইউনিয়নের ধুতিচোরা চর এলাকার ফয়েজ উদ্দিন বলেন, মিষ্টি কুমড়ার এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে প্রতিটি কুমড়া ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হবে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান বলেন, কৃষকদের মাঝে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়ার বীজ বিতরণ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় জেলায় দিন দিন মিষ্টি কুমড়ার আবাদ বাড়ছে। গত বছরের চেয়ে এবার ১৫ হেক্টর জমিতে কুমড়ার চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া এবার ফলন ভালো হওয়ায় সুদিনের স্বপ্ন দেখছেন চরাঞ্চলের চাষিরা। যদি নিদিষ্ট সময়ে বাজারজাত ও সঠিক মূল্য পায় তাহলে কৃষকরা আশার আলো দেখবে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ১ মাসের মধ্যে কৃষকরা বাজারে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে পারবে বলে জানান তিনি।
সুত্রঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *