সবুজ আলী আপন,লালমনিরহাট।

লালমনিরহাট তথা  উত্তরাঞ্চলের ঝাড় জঙ্গলে জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠা চুঁইঝাল এখন স্থান করে নিয়েছে কৃষকের বাগানের  গাছগাছালিতে। ঝুঁইঝালকে স্থানীয়রা চিনেন ‘চইপান’ নামে। সম্প্রতি কদর বেড়েছে ঝুঁইঝালের। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতিদিনই দলে দলে পাইকাররা ছুটছেন চুঁইঝালের সন্ধানে। অনুসন্ধানে দেখাগেছে চুঁইঝালের বাণিজ্যিক চাষের ব্যাপক সম্ভাবনার বিষয়টি। জেলার ৫টি উপজেলাতেই ব্যক্তি উদ্যোগে হয়ে আসছে এর চাষ।  তবে তা সীমাবদ্ধ রয়েছে বসতভিটায় লাগানো সুপারি,আম,কাঠাল বা অন্য কোনো গাছেই। এমন চুঁই চাষের দেখা মিলেছে আদিতমারীর দেওডোবা এলাকার শিক্ষক পংকজ কান্তি রায়,কালীগঞ্জের তেঁতুলিয়ায় পলাশ চন্দ্র ও তাঁর আশেপাশের বাড়ীতে এবং গোড়লের মোজাম্মেল হক সহ অনেকের বসতভিটায়। এ চাষের খোঁজ মিলেছে পঞ্চগ্রাম,মেঘারাম,ভেলাবাড়ী,ভোটমারী, দইখাওয়া, বড়খাতা সহ প্রায় সকল গ্রাম এলাকাতেও। এক সময়ের পান চাষের জায়গাটি দখল করে চলেছে স্থানীয় ভাষার এ চইপান বা চুঁইঝাল। উদ্যোগ দেখা গেছে ক্ষুদ্র পান ব্যবসায়ীদেরও। তারা বর্গা কিংবা চুক্তিভিত্তিক  চুঁইঝালের চারা লাগিয়ে চলছেন কৃষকদের গাছবাগানে। এমনই পান ব্যবসায়ী  চুঁইঝালচাষী গোড়লের আব্দুল হাকিম, উত্তর শ্রুতিধরের হাসানুর রহমান এবং দক্ষিণ মুসরত মদাতী গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র রায়। প্রত্যেকেই বর্গা ও চুক্তিতে গড়ে তুলেছেন একাধিক চুঁইঝালের বাগান। প্রতিজনের রয়েছে ৩শটিরও অধিক চুঁইগাছ যা থেকে একেকজনের বার্ষিক আয় হয় অর্ধলক্ষাধিক টাকা। আরো আয় হয় চারা থেকেও। প্রতিকেজি চুঁই বিক্রি হয় ২শ ৫০ থেকে ৫শ টাকায়।
কথা হয় চুঁইঝালের পাইকার(ক্রেতা) চাপারহাট এলাকার মজিদুল ও আলিমুল ইসলামের সাথে। কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চুঁইঝাল সংগ্রহ করে বড়ব্যবসায়ীর মাধ্যমে তা পাঠান খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে করে ভালোই আয় হয় তাঁদের।
ব্যাপক ঔষুধিগুণ সম্পন্ন এ চুঁইঝালের চাষাবাদকে  বাণিজ্যিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক রূপদিতে এর উৎপাদন প্রদর্শনী ও প্রশিক্ষণ সহ কৃষিবিভাগের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রাপ্তি সম্ভব হলে জেলার অর্থনীতিতে চুঁইঝালের চাষ ব্যাপক অবদান রাখবে বলে বিশ্বাস সংশ্লিস্টমহলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *