নিউজ ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের ছাতকের দরদালানের একসময় সবুজে ভরে উঠবে। ছাদবাগানে ফলবে লাউ, কুমড়া, টমেটো, শাক, শিমসহ নিত্যদিনের আহার্য সব সবজি। গোলাপ, টগর, জুঁই, চামেলিরা ছড়াবে সৌরভ। আম, পেয়ারা, মাল্টাসহ হরেক রকমের বিষমুক্ত ফল হাত বাড়ালেই মিলবে ছাদের বাগানে এভাবে ছাদ কৃষিতে সবুজ বিপ্লব ঘটানোর স্বপ্ন দেখছে ছাতক উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।

এর ধারাবাহিকতায় উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের গড়গাওঁ গ্রামে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মশিউর রহমানের পরামর্শে ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম নিজের বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন এক টুকরো সবুজ উদ্যান।

কৃষি অফিসের সরাসরি তত্ত্বাবধানে তার বাসার ছাদে মাল্টা, বেগুন, টমেটো, কাচা মরিচসহ নানান ধরনের সবজি ও ফলদ গাছের চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন তিনি।

ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম জানান, জলবায়ু পরিবর্তনে তাপমাত্রা বাড়ছে, প্রতিনিয়ত বাড়ছে দূষণ। আর এ বিপর্যয় রোধে ফাঁকা তপ্ত ছাদকে শীতল করতে এবং পরিবেশকে সহনীয় করতে পারে ছাদের গাছপালা। এ বোধ থেকে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মশিউর রহমানের পরামর্শ ও সহযোগিতায় শখের বসেই তিনি গড়ে তুলেছেন এ বাগানটি।

তিনি বলেন, পরিবারের নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বাড়ির ছাদে বাগান করা হয়েছে। বাড়ির ছাদে সফলভাবে শাক-সবজি, ফল-ফুল আবাদ দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকেই।

আশরাফুল আরও বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই তিনি ড্রাম ও টবে গাছ লাগিয়েছেন এতে তার ভবনের কোনো ধরনের ক্ষতি হচ্ছে না। 

গাছের পরিচর্যার ব্যাপারে তিনি বলেন, ব্যবসার কাজের পর যেটুকু সময় পান তার অধিকাংশ সময় তিনি এ বাগানেই কাটান। কোন ধরনের রাসায়নিক সার প্রয়োগ না করে জৈব সার ব্যবহার করেন।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মশিউর রহমান জানান, বাড়ির ছাদের এ বাগান শুধু শখের বিষয় নয়, পরিবেশ রক্ষায়ও রয়েছে এর বড় ভূমিকা। অবশ্য ছাদের ওপর যেসব বাগান দেখা যায় তার অধিকাংশই অপরিকল্পিত। একটু পরিকল্পিতভাবে বাগান করা হলে এটি প্রাত্যহিক শাকসবজির চাহিদা মিটিয়ে পরিবেশ রক্ষায়ও দারুণ ভূমিকা রাখবে। এজন্য তিনি ছাদ কৃষিতে বিপ্লব ঘটানোর লক্ষ্যে তার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় সকল অনাবাদি জমিতে ফসল ফলানোর পাশাপাশি বাড়ির ছাদে চাষাবাদ করার জন্য উদ্ভূত করছেন।

তিনি জানান, একটু পরিশ্রম আর পরিকল্পনায় বাড়ির কংক্রিটের ছাদটি পরিণত হতে পারে সবুজ শ্যামল মাঠে। আর ছাদ বাগানের মাধ্যমে তাজা শাকসবজি, ফলমূলের চাহিদা পূরণ, গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া, পরিবেশ দূষণমুক্ত ও বায়োডাইভারসিটি সংরক্ষণ করা যায়।

ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান জানান, আবাদি জমি কমে যাওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ছাদ কৃষি। ছাদ-কৃষি দেশে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে। মানুষ ছাদ কৃষিতে এগিয়ে আসলে কৃষি সম্প্রসারিত হবে। এই লক্ষেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

সৌজন্যেঃ কালের কন্ঠ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *