নিউজ ডেস্কঃ
চলতি মৌসুমে আমন ধান কেটে ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার বিভিন্ন উপজেলার কৃষাণ-কৃষাণীরা। ভালো দাম পাওয়ায় অনেক কৃষক তাদের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পর জমিতে রেখেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। এবার আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবং ধানের মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকরা খুবই খুশি।
তবে আনন্দের পাশাপাশি জেলার নিম্নাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে বিরাজ করছে বিষাদের ছায়াও। এসব এলাকায় আমন ধান রোপণের পূর্বে এবং পরে কয়েক দফা বন্যার কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই তারা আমন আবাদ করলেও আশানুরূপ ফলন ঘরে তুলতে পারছেন না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর নেত্রকোনায় ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬শ ২৫ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে এর মধ্যে আমন আবাদের পূর্বে এবং পরে কয়েক দফা বন্যায় জেলার ১০টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার ১শ ৯০ হেক্টর জমির আমন ধানের চারা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষকরা।
তবে আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবং ধানের বাজার মূল্য ভালো হওয়ায় কৃষকরা তাদের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নিতে পারবেন বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
এসব বিষয়ে জেলার কেন্দুয়া পৌর শহরের বাদে আঠার বাড়ি গ্রামের কৃষক আজিজ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় আমন ধানের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ফলনও খুব ভালো হয়েছে। আমি ধান কাটার পর জমিতে রেখেই ১ হাজার ৭০ টাকা মণ দরে বিক্রি করে দিয়েছি।
এদিকে জেলার নিম্নাঞ্চল মদন উপজেলার শিবপাশা গ্রামের কৃষক মনু মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের জমিতে ধানের চারা রোপণের কিছুদিন পরেই বন্যায় তা তলিয়ে যায়। এতে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিন দিয়ে ধান কাটছে কৃষক
জেলার কেন্দুয়া বাজারের ফড়িয়া ধান ব্যবসায়ী আবুল কালামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ বছর ধানের দাম অনেক বেশি। আমরা শুরুতে প্রতি মণ ভিজা ধান কৃষকদের জমি থেকেই ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা দরে কিনলেও বর্তমানে তা কিনছি ১ হাজার ৭০ থেকে ১ হাজার ৮০ টাকা মণ দরে। দিনদিনই ধানের দর বাড়ছে। কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যাতে করে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেন- এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। জেলার নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বেশিরভাগ কৃষকই এ বছর আমনের বাম্পার ফলন পেয়েছেন এবং ধানের দামও অনেক ভালো পাচ্ছেন বলেও তিনি জানান।
সুত্রঃ বার্তা২৪.কম