রাজশাহী জেলার সবচেয়ে বড় আমের মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজার। এই হাটে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার আম কেনাবেচা হয়ে থাকে। এই হাট ছাড়াও মৌসুমভিত্তিক উপজেলার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে কয়েকটি স্থানে অস্থায়ীভাবে আমের বাজার গড়ে উঠেছে।
বর্তমানে গোপালভোগ, লখনাভোগ, রানিপছন্দ, খিরসাপাতসহ (হিমসাগর) প্রতিদিন স্থানীয় বিভিন্ন জাতের আম পাওয়া যাচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের ভেতরে বাকি কয়েকটি জাতে আমবাজারে আসবে।
গেল দু’বছর ক রো না কালে আমের দাম অনেক কম থাকলেও এ বছর যে দাম পাচ্ছেন এতে সন্তু’ষ্ট বাগান মালিকরা।
তারা বলেন, আমের বাজারমূল্য বেশ ভালো। এরকম দাম থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাটে কথা হয়, আম ব্যবসায়ীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ১৩ মে থেকে আম ভাঙা শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে হাটে গুটি আমই ছিল। কিন্তু শুক্রবার (২০ মে) থেকে গোপালভোগ জাতের আম ভাঙা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ চাষিই গাছ থেকে আম ভাঙেননি। তবে গতকালের চেয়ে আজ সরবরাহ একটু বেশি। কিন্তু ফলন হওয়ায় এবার আমের দাম বেশি। আজ গুটি আম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ এবং গোপালভোগ আকার ভেদে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য স্থানীয় জাতের আম ১ হাজার ২০০ টাকা মণের মধ্যেই রয়েছে। এখন আর দাম কমার কোনো সুযোগ নেই। উল্টো রোজই মণপ্রতি আমের দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে বাড়বে বাজারে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারিরা আসছেন জেলার সবচেয়ে বড় আমের মোকাম বানেশ্বর। তারা বলছেন, আমের উৎপাদন কম হওয়ায় এবার দাম কিছুটা চড়া। দাম না কমলে লোকসান হওয়ার আশ’ঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেন, আমের ফলন কম হওয়ায় দাম বেশি। তাই কিনতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। বাজারদর না কমলে আমর’া ধ’রা খেয়ে যাব’।
এদিকে আড়তদাররা প্রতিদিন মণকে মণ আম কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাচ্ছেন। তারা বলেন, রাজশাহীর আম খেতে বেশ ভালো ও সুস্বাদু। এটি ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের নানা প্রান্তে যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন গড়ে এই হাটে ৪০ লাখ টাকার আম বেচাকেনা হচ্ছে
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর পুঠিয়া উপজেলায় ১৫৩০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এবং উৎপাদন লক্ষ মাত্র ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৮৩০ মেট্রিক টন, যা গত বছর ১৫৩০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছিলো এবং উৎপাদন লক্ষমাত্র ছিলো ১৮ হাজার ৫৩৪ মেট্রিক টন আম।
এব্যপারে পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুন্নাহার ভূঁইয়া জানান, এ বছর রাজশাহী অঞ্চলে আবহাওয়া ভালো থাকায় আমের ফলন ভালো হয়েছে। তবে গতবারের চেয়ে আমের গাছে মুকুল কম থাকায় আমের লক্ষ্যমাত্রা এবছর কম। তাই কৃষক এবছর ন্যায্য মূল্য পাবে বলে আশা করি।