গৌতম চন্দ্র বর্মন,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

ঠাকুরগাঁওয়ে এবার টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে বেশিভাগ মাঠ-ঘাট ও আবাদি জমি দীর্ঘ সময় ধরে জলমগ্ন থাকায় এ জেলার কয়েক হাজার গবাদিপশু চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে। ১০০ টাকার এক পোন কাড়ি (৮০ টা খড়ের আটি) এখন ৭ থকে ৮ শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনেক জায়গায় টাকা দিয়েও মিলছে না খড়-কাড়ি। এ অবস্থায় গবাদিপশুর মালিক ও খামারিরা চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেক গৃহস্থ গবাদিপশু বাঁচাতে মাঠের বাড়ন্ত রোপা আমন ক্ষেতের ধান গাছ কেটে গবাদিপশুকে খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় বাজারে গম ও ছোলার ভূষি, খৈ, চালের কুড়া, ভূট্টার আটাসহ সকল দানাদার পশুখাদ্যের মূল্য কৃষকের নাগালের বাইরে।জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, এজেলায় গবাদিপশুর খামার ১১হাজার ৭শ ৮২টি

রয়েছে। অধিকাংশ গবাদিপশুর মালিক মাঠ-ঘাট ও জমির আইলের ঘাস সংগ্রহ করে এবং বাড়ীতে সংরক্ষিত খড়-কাড়ি দিয়ে গবাদিপশু প্রতিপালন করে থাকেন। কিন্তু এ বছর বোরো মৌসুমে একটানা বর্ষনে বোরো ক্ষেতের খড়-কাড়ি কোন কৃষকেই শুকাতে ও সংরক্ষণ করতে পারেননি। চলতি আমন মৌসুমের শুরু থেকেই দফায় দফায় ভারী বর্ষনের ফলে গৃহস্থ বাড়ীতে সংরক্ষিত খড়-কাড়ি পচে যায়। এছাড়া জলাবদ্ধতার কারনে আমন ক্ষেতের আইল ও রাস্তা ঘাটের ধার থেকে ঘাস সংগ্রহ করা সম্ভব না হওয়ায় গো-খাদ্যের বর্তমান সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।৩ অক্টোবর শনিবার জেলার বন্যা কবলিত বিভিন্ন গ্রাম সরেজমিন ঘুরতে গিয়ে দেখা যায়, জামালপুর ইউনিয়নের মহব্বত পুর  গ্রামের কৃষক ননী গোপালের ছেলে পরেশ রায় (৩২) পরিবারের চারটি গরুর খাবারের চাহিদা মেটাতে বাজার থেকে রোপা আমন ক্ষেতের ধান গাছ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ অনেক পরিশ্রম, অর্থ ব্যয় ও যত্ন করে তিলে তিলে পরিচর্যা করে গড়ে তোলা এ ধান ক্ষেত থেকে মাস খানেক পরে কৃষকের সোনালী ধান ঘরে তোলা সম্ভব হতো। এ নিয়ে তার কষ্টের শেষ নেই।ঠাকুরগাঁও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে, চলতি আমন মৌসুমে সদর উপজেলায় ৩৫ হাজার ৮ শ ৪০ হেক্টর জমিতে রোপা আমান লাগানো হয়েছে। এর অধিকাংশ এখন জলমগ্ন।এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো:জাহেরুল ইসলাম বলেন, গবাদিপশুর মালিক ও খামারিরা প্রত্যেককে যদি গো-খাদ্যের জন্য স্বল্প পরিসরে নিজেদের বাড়ী-ভিটায় কিংবা আবাদী এককানি জমিতে বারবার কর্তনযোগ্য উচ্চফলনশীল নেপিয়ার, জার্মান ও পারা জাতীয় ঘাসের চাষ করতেন। তাহলে অনেকাংশে গবাদিপশুর এ খাদ্য সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *