ঠাকুরগাঁওয়ে সিয়ামের শখের কবুতরঠাকুরগাঁওয়ে সিয়ামের শখের কবুতর

গৌতম চন্দ্র বর্মন,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

কেভিড ১৯ সংক্রমন রোধে সংক্রম রোধে যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তখন অষ্টম শ্রেণি শিক্ষার্থী সিয়াম শখ করে বাজার থেকে ৩ জোড়া দেশীয় জাতের কবুতর কিনে বাড়িতে আনেন । ৩ জোড়া কবুতর যখন একে একে বাচ্চা তুলতে শুরু করল সিয়ামের মন খুশিতে ভরে উঠে। তিনি একজোড়া কবুতরের বাচ্চা বিক্রি করলেন ২০০ টাকা। তখন তিনি ভাবলেন কবুতর যদি বাণিজ্যিকভাবে পালন করা যায়, তাহলে তো বেশ লাভ হবে।

যেই ভাবনা সেই কাজ। বাড়ির উঠোনের পাশে সে তৈরি করল একটি কবুতরের খামার। তার খামারে আছে ঝর্না শারিং, গিয়াজুলি, সোয়া চন্দন, রেসার, রেড চেকার, গলা কষা, কালদম, টিকলি মুজা, শটপিছ, আউল, জালালি, গিরিবাজ ও কাগজিসহ দেশী-বিদেশী জাতের কবুতর। এছাড়া তার খামারেই রয়েছে কবুতরের সব-ধরনের ঔষধ ও ভ্যাকসিন।সিয়াম হোসেন ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের বিজিবি কেম্পের পিছনের মহল্লার পত্রিকার এজেন্ট শামছুল আলম বকুল। ছোট ছেলে।তিনি বডার গাট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।সরেজমিনে সিয়ামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বড় একটি টিনের ছাউনির ঘর। চারপাশে তারের নেট দিয়ে ঘেরা ভেতরে বসানো হয়েছে কাঠের তৈরী অর্ধশত কবুতরের খোপ।

আকারে বড় কবুতরগুলোর জন্য রয়েছে আলাদা খাঁচা। নিচে দেওয়া আছে খাবার, স্বচ্ছ পানি ও কবুতরের জন্য গোসলের জন্য তৈরি ছোট্ট হাউজ। সেখান থেকে কবুতরগুলো তাদের প্রয়োজন মত খাবার, গোসল সেরে বসছে নিজ নিজ কামরাতে। কেউ সকালের রোদে শরীরটাকে বিছিয়ে দিয়ে রোদ পোহাচ্ছে, কেউ নিজের বাচ্চাকে খাইয়ে দিচ্ছে, কেউবা বাসায় বসে ডিম তা দিচ্ছে। দেশী-বিদেশী নানা জাতের নানান রঙের কবুতর গুলো ঘরের মধ্যে ভিন্ন স্বরে বাক-বাকুম ডাকে পুরো বাড়িটিকে সবসময় মাতিয়ে রাখছে।

সিয়াম জানান, ছোট বেলা থেকেই কবুতর পালনে শখ ছিল তার। তাই সে শখ হিসেবে একদিকে যেমন কবুতর পালন করছে অন্যদিকে তা থেকে টাকা আসত, যা দিয়ে তার পকেট খরচটাও সহজেই চলে যেত। তিনি বলেন,রংপুর,দিনাজপুর,ও ঠাকুরগাঁও এ জেলা গুলো থেকে কবুতর সংগ্রহ করি।আর শীতের সময় কবুতরের জন্য খারাপ সময়। এ সময় কবুতরের ঘর সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। তা না হলে রোগ-জীবাণু ছড়ায়। প্রতি ৩ মাস পরপর প্রতিষেধক হিসেবে কবুতরগুলোকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।

সিয়াম আরও জানান, এখন প্রতি জোড়া দেশী কবুতরের বাচ্চার দাম ২০০-২৫০ টাকা এবং বিদেশী কবুতরের বাচ্চার দাম সাড়ে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। আগামীতে তার কবুতরের খামারটি আরও বড় করার চিন্তা রয়েছে। পরিবারের সবাই তাকে এ কাজে যথেষ্ট সহযোগিতা করে।

সিয়ামের কবুতর পালনে উৎসাহ দেখে তার নিজ এলাকা সহ আশপাশের অনেক বেকার যুবক কবুতর পালনে উৎসাহ যোগাচ্ছে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সুত্রে জানা যায়, কবুতোর পালন করে মোটামুটিভাবে সফল হয়েছেন সিয়াম। কিন্তু তিনি আমাদের কাছে কোন পরামর্শ নেন নাই। পরামর্শ নিলে আমরা নিয়মিত তার ওই কবুতরের খামার পরিদর্শনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সব ধরনের পরামর্শ দিব। এখন অনেকেই কবুতরের খামার গড়ে তুলতে পরামর্শের জন্য আমাদের কাছে আসছেন। তাদেরকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *