গৌতম চন্দ্র বর্মন ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে পাট একেবারে হারিয়ে যায়নি, বরং বাড়ছে। সোনালি আঁশ খ্যাত পাটের সেই সোনালি যুগের মতো বৃহৎ আকারে চাষ না হলেও একেবারে কম নয়। বিস্তীর্ণ পাটখেত মাঠের পর মাঠ সবুজে ছেয়ে গেছে। দিগন্ত জোড়া পাটের সবুজ গালিচা যেন কাউকে অভ্যর্থনা জানাতে কচি ডগাগুলো দুলছে। এমনই দৃশ্য দেখা যাবে মাঠে-মাঠে। আর সেই সোনালি আঁশে স্বপ্ন বুনছেন ঠাকুরগাঁওয়ের দরিদ্র হাজারও কৃষক পরিবার। বিগত সময়ের সোনালী আঁশের সোনার বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে নতুন ভাবে পাট চাষ শুরু করছে ঠাকুরগাঁয়ের কৃষকরা।
জেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৬০ হেক্টর। পাট আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৮১২ হেক্টর। গত বছরে পাট চাষ হয়েছিল ৫ হাজার ৮৬০ হেক্টর।
আর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ১ হাজার ২শ২২ হেক্টর জমিতে । বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে। রানীশংকৈল উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ১ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে। পীরগঞ্জ উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ১ হাজার হেক্টর জমিতে। হরিপুর উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ৮৮০ হেক্টর জমিতে।
ঠাকুরগাঁওয়ে এবার ভিন্ন জাতের পাট চাষ হয়েছে, এ অঞ্চলের কৃষকরা দেশি, তোষা, মেশতা ও উচু মাটিতে কেনাফ এইচ বি-৯৫ জাতের পাট চাষ করছে।
অন্যদিকে চলতি মৌসুমের শুরুতেই ধানের বাজার ভালো থাকায় হতাশার মাঝেও আশার আলো খুঁজে পেয়েছেন এ জেলার চাষিরা। চড়া দামে বীজ সার, কীটনাশক ও মজুর দিয়ে ধান চাষ করে কাটার পর কৃষক পাচ্ছেন ধানের ন্যায্যমূল্য। তাই এবার পাটের ও নায্য দাম প্রত্যাশী।
সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়নের কৃষ্টপুর গ্রামের কৃষক বাবুল বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করছি। এতে আমার প্রায় কুড়ি হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। আশা করি গতবারের ন্যায় এবারও পাটের ভালো দাম পাবো। একই গ্রামের কৃষক দুলাল, আব্দুর রাজ্জাক, মজিবর বলেন, পাটে খরচ ও পরিশ্রম বেশি। তাই এবার প্রতি মণ পাট ২০০০ টাকার নিচে বিক্রি হলে লাভ হবে না। তখন কৃষক পাট আবাদ ছেড়ে দিবে।
জেলা কৃষি অধিদফতরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলতাফ হোসেন জানান, সার, বীজের, তেমন কোনো সমস্যা ছিল না। পোকার আক্রমণও পাটের তেমন একটা ক্ষতি হয়নি, ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আশাকরি এবার এ জেলায় গত বছরের চেয়ে বেশি পাট উৎপন্ন হবে।