মনিরুজ্জামান , বিভাগীয় সংবাদদাতা।
কৃষিসমৃদ্ধ অঞ্চল রাজশাহীর পুঠিয়ায় এবার নতুন জাতের থাই বারোমাসি লেবু চাষে সাফল্য দেখা দিয়েছে। স্বল্প শ্রম ও উৎপাদন খরচ কম প্রকারান্তে লাভজনক হওয়ায় ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ, প্রচুর রস ও সুঘ্রাণযুক্ত থাই বারোমাসি লেবুর আবাদ পুঠিয়া সদর এলাকায় দিন দিন বাড়ছে। উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমির বেলে বা বেলে-দোআঁশ মাটিতে উৎপাদিত এ লেবু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হচ্ছে। ফলে এই প্রজাতির লেবু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় বেকার যুবক ও চাষীরা।
কৃষি প্রধান বাংলাদেশে যুগ যুগ ধরে কাগজি লেবু, পাতি লেবু, এলাচি লেবু ও বাতাবি লেবু চাষ হয়ে আসলেও আধুনিক উৎকর্ষের যুগে সেই তালিকায় কয়েক বছর আগে যোগ হয় হাইব্রিড জাতের লেবু। আবার হাইব্রিড জাতের লেবুর পর যোগ হয় নতুন জাতের থাই বারোমাসি লেবু। প্রায় ১.৫ বছর আগে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে লেবু চাষের বিষয়ে পরামর্শ পান উপজেলার সদর এলাকার মোঃ সেলিম উদ্দিন,পেশায় একজন বেসরকারি কীটনাশক কোম্পানির প্রতিনিধি। কলম সংগ্রহ করে ১২ শতক জমিতে থাই বারোমাসি লেবু চাষ করেন। প্রতি বছর একবার ডালপালা ছাটা, মাটি কোপানো, প্রতি ৩ মাসে একবার নিড়ানি ও ২ থেকে ৩ মাস অন্তর সেচ ও সামান্য জৈব সার দিতে হয় বাগানে।
ফলে তাঁর জমিতে বার্ষিক খরচ হয় মাত্র ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। তাছাড়া নিজের উৎপাদিত কলম চারা দিয়ে প্রতি বছর নতুন বাগান তৈরি করা ছাড়াও প্রতিটি কলম করা চারা ৩০ থেকে ৫০ টাকা করে বিক্রি করা যায়। আর তাতেই আসে তার সাফল্য। ফলে থাই বারোমাসি লেবুতে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষক অন্য আবাদ ছেড়ে এ লেবু চাষের দিকে যেমন বেশি ঝুঁকছেন, তেমনি ওই লেবু চাষ করে অনেকেই পরিবারের ব্যয় নির্বাহসহ ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার আর্থিক যোগান দিয়ে পারিবারিকভাবে সাফল্য অর্জন করছেন। এতে ওই লেবু চাষে এখন উৎসাহী হয়ে উঠছেন আরও অনেকেই।
সরেজমিনে গেলে কথা হয় মোঃ সেলিম উদ্দিন সহ অনেকের সঙ্গে। লেবু চাষী মোঃ সেলিম উদ্দিন জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ২০১৯ সালে ১২ শতাংশ জমিতে ১০০টি থাই বারোমাসি লেবুর কলম চারা রোপণ করেন। বৃদ্ধি পেয়ে তার বাগানের পরিধি এখন দ্বিগুণ হয়েছে। চারা কেনা, রোপণ, জমি তৈরি, সেচ ও সারসহ অন্যান্য খরচ মিলে প্রথম বছর তার ২০,০০০ টাকা ব্যয় হয়। পরের বছর ওইসব গাছে ফলন আসা শুরু হয়। রোপণের পরের বছর ২০২০ সালে তিনি আশা করছেন ৬০,০০০ টাকার লেবু বিক্রি করবেন।