দেশে এবার গম চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছেদেশে এবার গম চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে

নিউজ ডেস্কঃ
করোনাকালীন দুর্যোগেও থেমে নেই কৃষকের চাষাবাদ। এবার ধানের পাশাপাশি কৃষকরা গম চাষেও মনোযোগ দিয়েছেন। তাই গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে দিনাজপুরে গমের চাষও বেশি হয়েছে এবং বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ধানের চেয়ে গম চাষে খরচ কম এবং ফসল উৎপাদন কাজে কৃষকের শ্রমও কম। প্রতি বিঘা জমিতে গম চাষে কৃষকের খরচ হয় ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা। তাই অল্প শ্রমে স্বল্প ব্যয়ে কৃষকরা গম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এক বিঘা জমিতে ১৪ থেকে ১৮ মণ গম ঘরে তোলেন কৃষকরা। বাজারে গমের চাহিদার সাথে মূল্যও দিন দিন বাড়ছে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের চেয়ে এ বছরে গমের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরে জেলায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। এবার তা বৃদ্ধি পেয়ে চলতি মৌসুমে ১৩টি উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হচ্ছে।
এবার সারাদেশেই ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের গম চাষে আগ্রহী করেছে কৃষককে। উদ্ভাবিত গমের নতুন জাতের গড় ফলন হবে হেক্টর প্রতি সাড়ে ৪ থেকে ৫ টন। সারা দেশে এবার সাড়ে ৩ লাখ হেক্টর জমিতে গম চাষ হচ্ছে। ভাল দাম ও ভাল ফলন পাওয়ায় কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী এখন গম বীজ সরবরাহ করা গেলেই আগামী ২/১ বছরেই দেশে দ্বিগুণ পরিমাণ গম উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

উদ্ভাবিত নতুন জাতের বারি গম-৩৩, ডাব্লিউএমআরআই-২ ও ৩ সারাদেশে গম উৎপাদন বৃদ্ধিতে বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে গমের ফলন পাওয়া যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইন্সটিটিউট দিনাজপুরের (বিডাব্লিউএমআরআই) মহাপরিচালক ড. মো. এছরাইল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সারাদেশে এবার বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইন্সটিটিউট গমের ফলন ও উৎপাদন বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধমে ২৩০৫ জন কৃষকের জমিতে প্রদর্শনী খামার করতে ৪৩ টন বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও গম উৎপাদনে বিএডিসিকে এবার ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চ ফলনশীল নতুন তিনটি জাতের ২৩ টনসহ মোট ৬০ টন প্রজনন বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। আগের জাত ছাড়াও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চ ফলনশীল উদ্ভাবিত নতুন জাতের বারি গম-৩৩, ডাব্লিউএমআরআই-২ ও ৩ সারাদেশে গম উৎপাদন বৃদ্ধিতে বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে সারা দেশে সাড়ে ৩ লাখ হেক্টর জমিতে এবার গম চাষ করা হচ্ছে। কৃষকের আগ্রহ সৃষ্টিসহ চাহিদা বাড়লেও সেই অনুযায়ী প্রজনন বীজ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। জায়গা সংকটের কারণে বিডাব্লিউএমআরআই-এর পক্ষে প্রজনন বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এ সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্যে দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ সুগারমিলের কান্তা ফার্মাসহ বিভিন্নস্থানের পরিত্যক্ত জমি লীজে দেওয়ার জন্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত জমি পেলে বিডাব্লিউএমআরআই প্রতিষ্ঠানটি সারাদেশের কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের গম বীজ সরবরাহ করতে পারবে। আর এটা সম্ভব হলে ২/১বছরেই দেশে দ্বিগুণ পরিমাণ গম উৎপাদন সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

সুত্রঃ বিডি প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *