রাজশাহী পুঠিয়া উপজেলায় আসন্ন বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। উন্নত আধুনিক জাত, অনুকূল আবহাওয়া এবং কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ পাওয়ায় ধানের এ ফলনের সম্ভাবনা দেখছে উপজেলার প্রায় ১৩ হাজার বোরো কৃষক। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার বোরো মৌসুমে প্রায় ২৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায়১৪৫৭৫ টন(চাউলে)
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায় ইতোমধ্যেই ধান কর্তন শুরু হয়েছে। ফলন হচ্ছে আশাতীতের চেয়ে বেশি ৷ গোবিন্দপাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ ইয়ানুছ জানান, এবার উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি ১৫ বিঘা জমিতে ব্রি ধান-৮৯ ধানের আবাদ করেন। ফলন পেয়েছেন বিঘা প্রতি ৩৭ মণের মত। এদিকে সরিষাবাড়ি এলাকার কৃষক মোঃ মোজাফফর হোসেন জানান, তিনি এবার ব্রি ধান-৮১ এর আবাদ করে বিঘা প্রতি প্রায় ৩০ মণের মত ফলন পেয়েছেন ৷ ধানের বাম্পার ফলন হলেও সঠিক দাম নিয়ে শংকা প্রকাশ করছেন কৃষক ৷ কৃষি উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় এবং ধান কাটা শ্রমিকের সংকটে উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে, কিন্তু সে তুলনায় ধানের বাজার মূল্য কম। বাজারে ৬০০-৭০০ টাকা দরে ধান বিক্রি হচ্ছে, এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ধান চাষে আগ্রহ হারাবে কৃষক।
পুঠিয়া উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জনাব কামরুল ইসলাম জানান, আধুনিক উচ্চফলনশীল জাতের ব্যবহার, সারের মূল্য বিশেষ করে ডিএপি সারের মূল্য হ্রাস, সকল পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের নিবিড় পরামর্শ, ভর্তুকিতে ধান কাটা মেশিন (কম্বাইন হারভেস্টার) বিতরণ, বিনামূল্যে প্রণোদনা হিসেবে সার ও বীজ বিতরণ প্রভৃতি কারণে পুঠিয়া উপজেলায় ধানের এই বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন। অনুকূল আবহাওয়া বিরাজমান থাকলে ও সঠিক সময়ে ধান কর্তন করতে পারলে এ বছর ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন এ কর্মকর্তা। তবে ধানের দামের মূল্য নিয়ে তিনি বলেন কৃষি বিভাগ উৎপাদন ও সংরক্ষণ কলাকৌশল নিয়ে কাজ করে, বাজারমূল্য দেখভাল করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর নামে আলাদা প্রতিষ্ঠান। তবে ন্যায্যমূল্যের এ আশংকার কথা তারা বিভিন্ন ফোরামে তুলে ধরেন তারা।
এদিকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস লটারির মাধ্যমে ধান কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে অনেকের অভিযোগ রয়েছে। পর্যাপ্ত প্রচারণার অভাব, আদ্রতা পরীক্ষা,চিটার পরীক্ষার নামে কৃষক হয়রানি, প্রভাবশালী মহল কর্তৃক প্রলোভন দেখিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে কৃষি কার্ড ক্রয় ইত্যাদি নানা কারণে খাদ্য গুদামে ধান দিতে আগ্রহী নন স্থানীয় কৃষকরা।
তাই, ধানের বাম্পার ফলনের এই আশার প্রদীপ, নায্য মূল্য না থাকায় অনেকটাই নিবু নিবু করছে কৃষকের মনের গহীনে।