ধানের বীজ কিনে প্রতারণার শিকার ৭ কৃষক পেলেন ক্ষতিপূরণধানের বীজ কিনে প্রতারণার শিকার ৭ কৃষক পেলেন ক্ষতিপূরণ

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করে ক্ষতিপূরণ পেলেন ঝিনাইদহের সাত কৃষক। ঝিনাইদহ শহরের অগ্নিবীণা সড়কের শহিদ বীজ ভান্ডার থেকে ধানের বীজ কিনে প্রতারিত হন তারা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হলেন- হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের কৃষক জনাব আলী, আজিজার মন্ডল, আতিয়ার রহমান, নুজির আলী খাঁ, সজল হোসেন, আকাশ মিয়া, লিমন হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সহিদ বীজ ভান্ডার থেকে স্বর্ণ জাতের ধানের বীজ কেনেন ওই সাত কৃষক। এরপর জমিতে বীজতলা তৈরি করে সঠিক সময়ে চারা রোপণ করেন। ২০ দিনে ধান গাছের উচ্চতা হয় এক ফুটের মতো। আর এর মধ্যে চারা গাছে ধানের শীষ বের হতে শুরু করে।

বিষয়টি দেখে কৃষকরা অবাক হয়ে যান। এলাকার মাঠ কর্মীকে বিষয়টি জানালে তিনি সরেজমিনে দেখে জানান, এ শীষ থেকে ধান পাওয়া যাবে না। এমনকি গরুর খাবার হিসেবে খড়ও হবে না।

পরে সাত কৃষক জমি থেকে ধানের চারা গাছ তুলে ফেলেন। তাদের ক্ষতির বিষয়ে ঝিনাইদহ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

কৃষক জনাব আলী বলেন, ধানের বীজ কিনে আমি ছয় বিঘা জমিতে চারা রোপণের পর যখন দেখলাম দোকানি আমাদের ঠকিয়েছে। বিষয়টি জানালেও দোকানি আমাদের কোনো কথা শোনে না। এরপর আমরা সাতজন একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম আমাদের ক্ষতিপূরণের জন্য ভোক্তা অধিকার বরাবর একটি অভিযোগ দেব। এরপর আমরা সবাই ক্ষতিপূরণ পেয়েছি। এখন আবার নতুন করে ধানের চারা রোপণ করতে পারবো।

এ বিষয়ে জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল বলেন, শহরের অগ্নিবীণা সড়কের শহিদ বীজ ভান্ডার থেকে চলতি মৌসুমে আবাদের জন্য স্বর্ণা ধানের বীজ ক্রয় করেন ওই সাত কৃষক। বীজতলায় বীজ বপনের পর স্বাভাবিকভাবেই চারা গজায়। কিন্তু বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করার কয়েকদিন পর স্বাভাবিক বৃদ্ধির পরিবর্তে চারা থেকে শীষ গজাতে শুরু করে। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দেয়।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে ১৮ আগস্ট জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযোগ করেন তারা। শহিদ বীজ ভান্ডার ‘স্বর্ণা’ জাত বলে বিক্রি করে। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতামত গ্রহণ করে জাতটি ভেজাল বলে বিবেচিত হয়। পরে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পাওয়া যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বিঘা প্রতি ৯ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। পরবর্তীতে সাত কৃষককে ২৫ বিঘা জমির জন্য ২ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয় ওই প্রতিষ্ঠানটি।

শহিদ বীজ ভান্ডারের মালিক শহিদুর ইসলাম শহিদ জানান, হরিণাকুন্ডুর কিছু কৃষক আমার কাছ থেকে ধানের বীজ কেনে। তারা ভোক্তা অধিকারে কাছে অভিযোগ করে তাদের খারাপ বীজ দিয়েছি। এরপর ভোক্তা অধিকার থেকে আমাকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়ে। সে অনুযায়ী আমি ক্ষতিপূরণ দিই।

সুত্রঃ জাগো নিউজ

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *