চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর লরেঞ্চ গ্রামে ৬০ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে সমালয় পদ্ধতিতে ধানের চাষাবাদ করা হয়েছিল। অবশেষে সেই জমির ধান কাটা শুরু হয়। এ কর্মসূচির আওতায় জমিতে যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ থেকে কর্তন পর্যন্ত সব প্রক্রিয়া শেষ হবে। এতে উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি ধান চাষে লাভবান হবে কৃষক। খরচের তুলনায় দিগুণের আশাবাদী তারা।
তবে কৃষকদের জন্য খুশি ও আনন্দের বিষয় হলো এ পদ্ধতিতে রোপণকৃত ধান থেকে উপজেলা খাদ্য অফিস প্রতিমণ ধান ১ হাজার ৮০ টাকা দরে সরাসরি কৃষকদের থেকে সংগ্রহ করবে। এতে করে কৃষকরা ভালো দাম পাবে এবং প্রতারিত থেকে মুক্ত হবে।
গত শনিবার বিকলে থেকে উপজেলার উত্তর চর লরেঞ্চ গ্রামে হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ধানকাটার উদ্বোধন করেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. ইখতারুল ইসলাম।
এর আগে চলতি মৌসুমের ১৩ ফেব্রুয়ারি যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করা হয়। এছাড়া বিশেষ ট্রেতে চারা তৈরি করা হয়। যা পরবর্তীতে মেশিনে রোপণ করা হয়েছিল।
এদিকে নতুন নিয়মে হারভেস্টিং মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা দেখতে আসেন এলাকার কৃষক পরিবারের বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। অনেকটাই হাতের ছোঁয়া ছাড়াই ধান কাটা, মাড়াই ও প্যাকেজিং হচ্ছে। সহজলভ্য এমন পদ্ধতিতে খুশি তারাও।
ধান কাটা উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা তারেকুল আলম, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার দত্ত এবং স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জানান, কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার সহজ করতে ৫০ একর জমি একত্রিত করে সমালয় পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হয়েছিল।
শনিবার হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ধান কেটে কৃষক ফসল ঘরে তোলেন। এই পদ্ধতিতে শ্রমিক সংকট ও নানা প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে। কমেছে উৎপাদন খরচও।
তিনি আরো জানান, এ প্রকল্পের কৃষকদের জন্য বীজ ধান, চারা তৈরি, রোপণ, সার এবং ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। কৃষকরা শুধুমাত্র সেচের পানি ও চাষের পয়সা খরচ করেছে। আর সমস্ত প্রক্রিয়াটি কৃষি অধিদফতরের মাধ্যমে করা হয়।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা তারেকুল আলম জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত ধান কৃষক যাতে সরাসরি খাদ্যগুদামে বিক্রি করতে পারে সেজন্য কৃষকদের জানানো হয়েছে।
এ সময় সমালয় পদ্ধতিতে জমিচাষ করা কৃষক শাহে আলম জানান, তিনি ৪০ শতক জমিতে প্রায় ৪০ মণ ধান পাবেন।
তিনি আরো জানায়, এ পদ্ধতিতে কৃষকের কষ্ট ও খরচ কমে গেছে।
জানা যায়, সমালয় পদ্ধতিতে বিস্তীর্ণ জমি একত্রিত করে একই সময়ে একই সঙ্গে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদের আওতায় আনা হয়। ট্রে ও পলিথিনে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় বীজতলা। চারা তৈরি হতে সময় প্রায় সাত দিন। সেখান থেকেই বীজ নিয়ে বপন করা হয় ক্ষেতে।
সূত্রঃ
ডেইলি বাংলাদেশ