নভেম্বর শেষে সাড়ে ৫৫ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে: ব্রিনভেম্বর শেষে সাড়ে ৫৫ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে: ব্রি

নিউজ ডেস্কঃ
নভেম্বর শেষে বাংলাদেশে চাহিদা মিটিয়ে সাড়ে ৫৫ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।  রোববার সকালে চালের মজুদ নিয়ে এক ভার্চুয়াল সেমিনারে নিজস্ব জরিপ গবেষণার বরাতে এ তথ্য জানান ব্রি মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর।

তিনি বলেন, চালের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। গত বোরো ও আমন মৌসুমের উদ্বৃত্ত ধরে জুন পর্যন্ত দেশে ২ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার টন চালের মজুদ ছিল।

“আগামী নভেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মেটানোর পরেও ৫ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন টন চাল দেশের অভ্যন্তরে উদ্বৃত্ত থাকবে। নভেম্বর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৫০ কোটি মানুষের চাহিদা মেটানোর পরেও চাল ৩৬-৭৮ দিনের চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। “

নভেম্বরের মধ্যে আউশ ও আমনের উৎপাদন যুক্ত হলে বাংলাদেশে আপাতত খাদ্য ঘাটতির কোনো আশঙ্কা থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন ব্রি মহাপরিচালক।

ব্রির জরিপের তথ্য অনুযায়ী, এবছর সারা দেশে ধানের ফলন গড়ে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। আর চালের উৎপাদন বেড়েছ প্রায় ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

এর মধ্যে বোরো মৌসুমে চালের উৎপাদন ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়ে ২ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে।

উপযোগী আবহাওয়া, ব্যবস্থাপনা, ডিএপি সারের দাম কমানো, ব্রি-ডিএই যৌথ উদ্যোগে ১৪টি কৃষি অঞ্চলে আঞ্চলিক কর্মশালা, বোরো মৌসুমের শুরুতে কৃষক প্রশিক্ষণ এবং কৃষি যান্ত্রিকীকরণে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক হয়েছে বলে জানান শাহজাহান।

ব্রির তথ্য বলছে, বোরো ধান চাষিরা এ বছর গড়ে বিঘা প্রতি ১ হাজার ৬০৪ টাকা লাভ করেছেন, যেখানে গত বছর তাদের লোকসান গুণতে হয়েছিল।

ব্রি মহাপরিচালক বলেন, ভোক্তা শ্রেণি ভবিষ্যৎ খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা থেকে আতঙ্কিত হয়ে বেশি পরিমাণ চাল মজুদ করেছেন। অপরপক্ষে সরকারসহ অন্যান্য চাল ব্যবসায়ীরা গতবছরের তুলনায় কম পরিমাণে চাল মজুদ করেছেন।

“সার্বিকভাবে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ধান-চাল মজুদের প্রবণতা কিছুটা বেশি থাকলেও সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত হয়নি।”

ব্রির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাল উৎপাদন খরচের ক্ষেত্রে মৌসুমে বিদ্যমান সর্বনিম্ন দামে মিল মালিকরা যে ধান কেনেন সেটি থেকে কেজিপ্রতি চাল উৎপাদনে ২৭ দশমিক ৮৬ টাকা খরচ হয়।

অন্যদিকে সর্বোচ্চ দাম বিবেচনায় দেখা যায়, কেজি প্রতি চাল উৎপাদনে ৩৫ দশমিক ৮০ টাকা খরচ হয়। গড় বিবেচনায় এক কেজি চাল উৎপাদনে ৩২ দশমিক ৩৪ টাকা ব্যয় হয়।

বিদ্যুৎ বিল, যানবাহন ও শ্রমিক খরচ বাড়ার কারণে এবছর ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ খরচ বাড়লেও সরকার ঘোষিত দামে চাল বিক্রি করে মিল মালিকরা লাভবান হচ্ছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

‘ন্যাশনাল সেমিনার অন ফুড সিকিউরিটি ইন দ্য কোভিড-১৯ এরা: ইজ বাংলাদেশ রিয়েলি গোয়িং টু ফেইস অ্যানি রাইস শর্টেজ ইন দ্য শর্ট রান’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, বিশেষ অতিথি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও মুখ্য আলোচক ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ) ড. শামসুল আলম।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমানারা খানুম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ পুলের সদস্য এমিরেটাস অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার মন্ডল, প্রাক্তন কৃষি সচিব এস এম নাজমুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রাক্তন মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান।
সুত্রঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *