কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি।
কিশোরগঞ্জ জেলায় বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত কেনাফের জনপ্রিয় জাত এইচসি-৯৫ বীজের চাহিদা দিন দিন ব্যাপক হারে বেড়েই চলছে কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ বীজের যোগান না থাকায় কৃষক খুবই ক্ষিপ্ত। তারই প্রতিরূপ দেখা যায় পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ অফিসে।
প্রায় ২০০০ জন পাটচাষি সরকারি মূল্যে (প্রতি কেজি ৩০০/-) কেনাফ বীজ নেওয়ার জন্য উপস্থিত হন। তাছাড়া প্রতিনিয়তই চাষিরা বীজের জন্য আসেন। তারা বাজারের বীজের প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না। গুণগত মানসম্পন্ন কেনাফ বীজ পাওয়ার আশায় তারা গবেষণা কেন্দ্রে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু গবেষণা কেন্দ্রের জায়গা কম থাকায় কৃষকের চাহিদার তুলনায় নগন্য পরিমাণ কেনাফ বীজ যোগান দিতে পারে। বীজ উৎপাদন করে কৃষকদের সরবরাহের জন্য সরকারের আলাদা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
পাটচাষিরা পাট গবেষণার গুনগত মানসম্পন্ন কেনাফ বীজের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জোরালো দাবি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, কিশোরগঞ্জ জেলায় প্রায় ১০০-১৩০ মেট্রিক টন কেনাফ মে¯তার বীজ প্রয়োজন। কিন্তু প্রায় ০.৭ মেট্রিকটন কেনাফ বীজ সরকারি মূল্যে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করে পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ অফিস।
অত্র কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, জনাব ডঃ মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, গবেষণা কেন্দ্র মূলত জাত ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে এবং গবেষণা কাজের অতিরিক্ত বীজটুকুই কৃষকদের যোগান দিতে পারেন। কৃষক যাতে নিজের বীজ নিজে করে সেজন্য আগামী বীজ মৌসুমে কেনাফ চাষিদের মাঝে বীজ সরবরাহের বিষয়ে বিজেআরআই এর মাননীয় মহাপরিচালক, ডঃ আ.শ.ম. আনোয়ারুল হক অত্র কেন্দ্র প্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
অত্র কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জনাব মোঃ আবুল বাশার বলেন, এইচসি-৯৫ জাতের কেনাফের চাষাবাদ পদ্ধতি খুবই সহজ, কৃষক অল্প খরচে অনেক বেশি লাভবান হন এবং এই জাতের আঁশের ফলনও অনেক বেশি। পাটচাষি মোঃ খায়রুল ইসলাম বলেন, আমি অনেক সকালে পাট গবেষণা কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ অফিসে এসেছি করিমগঞ্জ থেকে শুধুমাত্র ভালো কেনাফের বীজ নেওয়ার জন্য। আমার বীজ লাগে প্রায় ১০-১২ কেজি কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় কম বীজ পেয়েছি। সামনে তিনিও বীজ করবেন বলে কথা দেন।
অধিকাংশ কৃষক কেনাফ বীজ না পেয়ে হাতাশা প্রকাশ করেন এবং কেউ কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিশোরগঞ্জ মডেল থানার সহযোগিতা নেওয়া হয়।