নিউজ ডেস্কঃ
পাহাড়ের আঁকা-বাঁকা পথে মিলছে বাহারি সবজি। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নর-নারীরা জুমে উৎপাদিত হরেক রকম সবজি নিয়ে পসরা সাজিয়েছে পাহাড়ের পথে প্রান্তরে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জমজমাট থাকে তাদের অস্থায়ী বাজার।
এ বাজারে স্থানীয়দের চাহিদা থাকলেও আকর্ষণ বেশি পর্যটকদের। জুম পাহাড়ে উৎপাদিত আদা ও হলুদের ফুল, বাঁশকরুল (বাচ্ছুরি), মাশরুম, ধানি মরিচ আর আমিলা (টকপাতা) ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জনপ্রিয় খাবার হলেও এসব সবজির চাহিদা রয়েছে বাঙালীদেরও। তাই পরিচ্ছন্ন সতেজ সবজির জন্য এ বাজারে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে।
অন্যদিকে, পাহাড়ে শীত আশার আগেই এসেছে শীতের সবজি। পাহাড়ে উৎপাদিত ফুল কপি, বাঁধা কপি, মারফাসহ হরেক রকম শীতের সবজিও মিলছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের এ অস্থায়ী ভাসমান বাজারে। রাঙামাটির প্রবশে মুখ কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সবজির পসরা। এপর সামনে আগালে সপছড়ির মুখেও মিলবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ছোট ছোট ভাসমান বাজারের দোকান। সারি সারি সজানো কাকরোল, বেগুন, ভুট্টা, মিষ্টি আলু, ঔল কচু, কচু শাক, কুমড়া, কলার মুচা, (কলার ফুল) আর বিভিন্ন রকম শাক। এসব সবজির দামও কম। তবে চাহিদা অনেক। আর লাভও বেশি।
এব্যাপারে কথা হয় জুম চাষী সাধনা চাকমার সাথে। তিনি বলেন, পাহাড়ে জুম ক্ষেতে এসব সবজি তারা চাষাবাদ করে থাকে। পাহাড়ের বাজারগুলো দূরে তাই এসব সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করার অনেক কষ্ট। সড়কের পাশে সবজি নিয়ে বসলে মানুষ চলাচল করার সময় নিয়ে যায়। সহজে বিক্রিও হয়ে যায়।
একই কথা জানালো চন্দ্রমহন লাল চাকমাও। তিনি বলেন, বাজারের চেয়ে সড়কে বসে সবজি বিক্রি করলে লাভ বেশি। পর্যটকরা বেশি নিতে চায় জুমের সবজি। তাই সবজি বিক্রি করতে বেশি কষ্ট হয় না।
কৃষি বিভাগ বলছে, বাংলাদেশের একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামেই জুম চাষ হয়ে থাকে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জুমচাষীরা পাহাড়ের ঢালে গর্ত খুঁড়ে একসঙ্গে ধান, তুলা, তিল, ভূট্টা, যব, আর আদা, হলুদসহ বিভিন্ন রকম সবজির বীজ বপন করে। আষাঢ়-শ্রাবণ মাস থেকে জুমের ফসল তুলা শুরু হয়। ধান পাকে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে। পরে আসতে আসতে ফলতে থাকে বিভিন্ন সবজি। গেলো বছরের তুলনায় এ বছর রাঙামাটিসহ পার্বত্য তিনটি জেলার পাহাড়ে জুমের বাম্পার ফলন হয়েছে।
সুত্রঃ বিডি-প্রতিদিন