একরামুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর):
উজান থেকে নেমে আসা পানি ও দফায় দফায় ভারী বর্ষণের ফলে তলিয়ে গেছে রংপুরের পীরগাছার বিভিন্ন এলাকা। সেই সাথে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেতসহ ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুর ও মৎস্য খামারের মাছ। অতিবৃষ্টির কারণে কাজে যেতে না পারায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
গত শনিবার (১৮ জুলাই) মধ্যরাত থেকে এখন পর্যন্ত দফায় দফায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ আবারও প্লাবিত হয়েছে। অনেকের বাড়িতে ফের পানি উঠে পড়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপজেলার উঁচু এলাকাগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশনের লাইনগুলো ডুবে গেছে। অধিকাংশ রবিশস্যের ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পূর্ব থেকে সতর্ক না থাকায় হঠাৎ ভারী বর্ষণে অনেক পুকুর ও মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে। খামারিরা ও কৃষকরা কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে। এদিকে ভারী বর্ষণে বিভিন্ন উঁচু নিচু এলাকা পানিতে ভরে গেছে। ফলে কিছু জেলে এর সুযোগও নিচ্ছে, কেউ শখে কেউ পেশায় বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে মাছ শিকার করছে প্লাবিত এলাকাগুলোতে। একদিকে খামারিদের কাঁন্না, অন্যদিকে মাছ শিকারিদের মুখে হাসি। যেন কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ। মাছ শিকারিরা বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে মাছ ধরছে। যেমন-কারেন্ট জাল, হাত জাল, ভুরঙ্ক, ইকরি, ডারকি, হেঙ্গা, পাচা প্রভূতি উপকরণ দিয়ে তারা মাছ ধরে থাকে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাছুয়াপাড়া গ্রামের মাছ চাষী জরিনা বেগম বলেন, টানা বর্ষণের ফলে আমার পুকুর থেকে অনেক মাছ বের হয়ে গেছে। যদি এমন টানা বৃষ্টি হয়, তাহলে বাকিটুকুও মাছ বের হয়ে যাবে। এতে আমার অনেক ক্ষতি হবে।
পীরগাছা ইউনিয়নের অনন্তরাম গ্রামের মৎস্য চাষী ইব্রাহিম মিয়া জানান, রাত থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় তার পুকুরের প্রায় ৬০ হাজার টাকার মাছ ভেসে গেছে। হঠাৎ ভারী বর্ষণের ফলে পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় মাছ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শামিমুর রহমান বলেন, ভারী বর্ষণের ফলে আমাদের ফসলি জমির তেমন কোনো ক্ষতি হবে না কারণ আমরা এখনো আমন ধানের চারা জমিতে রোপন করিনি। শুধু জমির প্রস্তুতির কাজ চলছিল। তবে আমরা আমন ধানের ৬ হেক্টর বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কা করছি। এদের কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে কিনা, এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সরকারকে জানিয়ে দিয়েছি। বরাদ্দ পেলে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আয়েশা আক্তারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ফোন না ধরায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।