পুঠিয়া প্রতিনিধি।

পুঠিয়ায় রসুনের ফাটা রোগ এর ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রসুনের গাছ ফেটে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কুশি বের হওয়ার কারণে এ ফলন বিপর্যয় হতে পারে বলে স্থানীয় কৃষকদের অভিমত। উপজেলার রসুন উৎপদনকারী এলাকা হিসেবে সুপরিচিত সদর ইউনিয়নের ভাল্লুক গাছি, নন্দনপুর জিউপাড়া, কান্দ্রা বিল ও বানেশ্বর ইউনিয়নের শাহবাজপুর বিল।

এই সব এলাকায়ে রসুনের গাছগুলো ফেটে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কুশি বের হচ্ছে । এতে কৃষকেরা তাদের রসুনের ফলন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার এবং অসময়ে অতিরিক্ত সেচ প্রয়োগের ফলে রসুনের এ ধরনের রোগ হতে পারে। মাটিতে জৈব উপাদানের পরিমান ৫ শতাংশ থাকার কথা কিন্তু কেমিক্যাল সার অতি মাত্রায় প্রয়োগের ফলে মাটির এ জৈব উপাদান ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়। রসুন চাষের জন্য বিঘা প্রতি ইউরিয়া ২৯ কেজি, টিএসপি ৩৬ কেজি, এমওপি ৪৪ কেজি, জিপসাম ২০ কেজি, বোরন ১ কেজি, জৈব সার ৬’শ ৬৭ কেজি ও খৈল ৬’শ ৬৭ কেজি প্রয়োগের কথা থাকলেও কৃষক পর্যায়ে জৈব সার প্রয়োগ হয় অনেক কম কিন্তু রাসায়নিক সার প্রায় দ্বিগুণ পরিমান সার ব্যবহার হয়ে থাকে। রসুন ফলস উৎপাদনে মাটির জৈব উপাদানে পরিমান কমে গেল ফলন বিপর্যয় হতে পারে। এছাড়া অসময়ে অতিমাত্রায় রাসায়নিক সারের উপরি প্রয়োগ ও সেচ প্রয়োগে এই ফাটা রোগের বিস্তার ঘটছে।

এবারে পুঠিয়া উপজেলায় রসুনের চাষ হয়েছে ২ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে। লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার ২’শ ৮০ টন। গতবারের চেয়ে ১ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে বেশি রসুন চাষ হচ্ছে বলে কৃষি অফিস জানিয়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামের রসুন চাষি জয়নাল বলেন, এ বছর প্রায় এক বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছেন তিনি। আগামি দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে রসুন উঠতে সুরু করবে।

এসময় রসুন ফেটে ঝাটার মতো গাছ বের হচ্ছে। কিছুতেই এর কোন প্রতিকার করতে পারছিনা। এ অবস্থায় আমাদের রসুনের খরচ উঠা দায় হবে। এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন নাহার ভুঁইয়া মাটি পরীক্ষা করে সার প্রয়োগের তাগিদ দেন এবং অসময়ে অতিরিক্ত সার উপরি প্রয়োগ ও সেচ প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে বলেন। এছাড়াও জৈব সার যেমন, ভার্মি কম্পোস্ট, কেঁচো সার ও ট্রাইকো কম্পোস্ট সার প্রয়োগের পরামর্শ দেন এ কর্মকর্তা। এই অবস্থা মোকাবিলায় উপজেলা কৃষি অফিসার এর নির্দেশে সকল উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে থেকে নিয়মিত রসুন চাষীদের পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *