সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার সময় ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ যা ৭০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছিল, তা বাড়তে থাকে। এ সপ্তাহেই শতকের ঘর ছাড়ায়।
পেঁয়াজের দর আবারও চড়তে শুরু করেছে; এক সপ্তাহের ব্যবধানেই খুচরা ও পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। সরকারি নির্ধারিত মূল্যের দ্বিগুণের কাছে গিয়ে পৌঁছেছে দাম, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকার আশেপাশে।
বৃহস্পতিবার যারা কয়েকদিন পর বাজারে গেছেন তারা রান্নার অন্যতম এ উপকরণের এমন দাম শুনে কিছুটা থমকেও গেছেন। এলাকার বাজার বা দোকানের চেয়ে ঢাকার বৃহত্তম কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারে কিছুটা কমে মেলে বলে সেখান থেকে কেনাকাটা করেন অনেকেই। এদিন বিকালে অফিস ফেরত এমন ক্রেতাদের বেশ কয়েকজনকে এ বাজারে দাম শুনে পরিকল্পনা বদলাতেও দেখা গেছে; যতটুকু কিনবেন বলে ঠিক করেছিলেন তার চেয়ে কিনেছেন কম।
ঢাকার আরেক পাইকারি বাজার যাত্রাবাড়ীতেও ভালো মানের এক কেজি দেশি পেঁয়াজ খুচরায় ১২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে আমদানি করা ও হাইব্রিড জাতের পেঁয়াজের দর ছিল ৭০ থেকে ৯০ টাকা।
যাত্রাবাড়ীর পাইকারি বিক্রেতা মজিবুর রহমান পাঁচ কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৬০ টাকায় বিক্রির কথা জানালনে। ভারত ও মিয়ানমারেরগুলোর দাম ৩৫০ টাকা। মতিঝিল এলাকার দরও ছিল কাছাকাছি।
অথচ সরকার দেশি পেঁয়াজের কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ দাম ঠিক করে দিয়েছে ৬৫ টাকা। দাম বেঁধে দেওয়ার সময় ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ যা ৭০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছিল, তা বাড়তে থাকে। এ সপ্তাহেই শতকের ঘর ছাড়িয়ে যায় বলে দোকানিরা জানান।
রাষ্ট্রায়ত্ত ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মূল্য তালিকায় অবশ্য দাম ছিল কম। বৃহস্পতিবার সংস্থাটির নিত্যপণের দরের মধ্যে দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকায় বিক্রির তথ্য দেওয়া হয়েছে। আমদানি করা পেয়াঁজের দর ছিল ৭০-৭৫ টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক সপ্তাহে আগে দেশি পেঁয়াজের দর ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। এক মাস আগে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সরকারি হিসাবেই এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এক বছর আগে যা ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা; বেড়েছে ১০৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
বিক্রেতারা বলছেন দেশে বেশি চাহিদা পাবনায় উৎপাদন হওয়া পেঁয়াজের। কারওয়ান বাজারে পাইকারি দরে এ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৯২ টাকা দরে। পরিবহন খরচ ও মুনাফা মিলিয়ে খুচরায় তা গিয়ে ঠেকেছে ১২০ টাকায়।
অপরদিকে ফরিদপুর ও মাদারীপুর থেকে আসা দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল প্রতি কেজি ৮৮ টাকা; খুচরায় যা বিক্রি হয় ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়।
বিকালে অফিস শেষে পেঁয়াজ কিনতে আসা রমিজ উদ্দিন দর জিজ্ঞাসা করতেই বিক্রেতা মঞ্জুর আলম পাল্লা (পাঁচ কেজি) চাইলেন ৪৬০ টাকা। দাম শুনে ক্রেতা থমকে গিয়ে না কিনেই ফিরে যাওয়ার সময় বললেন, ‘‘এত দামে ক্যামতে কিনুম। দাম কমুক-তারপর কিনুম।’’
সরবরাহ কেমন জানতে চাইলে আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী রাশেদুল করিম বলেন, বাজারে পেঁয়াজের অভাব নাই। আগের মতোই আছে। তবে দাম বাড়ায় বিক্রি কমছে।