ভোক্তাকে ভোগাচ্ছে পেঁয়াজের বাজার। এরই মধ্যে আরেক দুশ্চিন্তার খবর দিচ্ছে মসলাজাতীয় পণ্য আদা। চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় আদার দাম বাড়ছে বলে দাবি পাইকার ও আমদানিকারকদের। তবে ভোক্তারা বলছেন, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে নানা অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের থেকে জানা গেছে, বাজারে দেশি আদার পরিমাণ খুব কম। বেশির ভাগই আমদানি করা। সারাবছরই কমবেশি চায়না আদা পাওয়া যায়। রাজধানীতে এক মাস আগে এর কেজি ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, দ্বিগুণের বেশি দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। তা-ও কয়েক দোকান ঘুরলে দু-এক দোকানে পাওয়া যায়। চায়না আদার দাম বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এখন অপ্রচলিত বাজার থেকেও এ পণ্য আমদানি করছেন।
মিয়ানমার ও ভারত থেকে আসা বেশির ভাগ আদাকেই দেশি বলে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। নতুন করে এখন ভারত, ভুটান ও ভিয়েতনাম থেকেও আমদানি হচ্ছে। এগুলোকেও দেশি আদা বলে বিক্রি করছেন তারা। মাসখানেক আগে এসব আদার কেজি বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। বাজারে এখন ইন্দোনেশিয়ার আদাও পাওয়া যাচ্ছে।
টিসিবির তথ্যমতে, এক বছরে দেশি আদার দাম বেড়েছে ১৭৫ শতাংশ। আর আমদানি করা আদার বেড়েছে ২১০ শতাংশ।
সরবরাহে ঘাটতির কথা জানালেন আমদানিকারকরাও। শ্যামবাজার পেঁয়াজ-আদা-রসুন ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রচার সম্পাদক ও আদা আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশে এখন বছরে ১২ লাখ থেকে ১৫ লাখ টন আদার প্রয়োজন হয়। এর সিংহভাগই আমদানি করা। সবচেয়ে বেশি আসে ভারতের কেরালা ও চীন থেকে। গত বছর কেরালার আদা পাইকারিতে ৩০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এ কারণে বাজারে দাম নাগালের মধ্যে ছিল। কিন্তু এবার কেরালার আদা আসছে না। চীন থেকেও আসছে খুব কম।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, দেশে বছরে আদার চাহিদা তিন লাখ টনের। তবে আমদানিকারকদের দাবি, চাহিদা রয়েছে ৬ থেকে ১০ লাখ টনের। দেশে উৎপাদন হয় খুবই কম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে আদা উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার টন। ফলে চাহিদার বড় অংশই মেটাতে হয় আমদানি করে।
সুত্রঃ আরটিভি