দেশে উদ্বৃত্ত আলু রয়েছে, যা নষ্ট হচ্ছে হিমাগারে। এ পরিস্থিতিতে প্রতি কেজি আলুতে ৯ টাকা ভর্তুকি দাবি করেছে হিমাগার মালিকদের সমিতি। এছাড়া ৯টি প্রস্তাবনা দিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, চলতি বছর আলুর বাম্পার ফলন হওয়ায় মার্চ-এপ্রিল মাসে চারশ হিমাগারে প্রায় ৪০ লাখ টন আলু সংরক্ষিত হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ মেট্রিক টন আলু বিক্রি না হলে ১৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অ্যাসোসিয়েশন প্রস্তাবগুলো হলো
১. ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ব্যবসায়ীদের যে আলু হিমাগারে আছে সেই আলুর ওপর আর্থিক সহায়তা প্রদানে সরকার থেকে প্রতি কেজিতে ৯ টাকা ভর্তুকি প্রদান।
২. হিমাগার শিল্পকে বাঁচিয়ে তুলতে ৪ শতাংশ সরল সুদে ২০ বছর মেয়াদে ঋণ পুনঃতফসিল করা।
৩. দ্রুত আলুর ব্যবহার বাড়াতে ত্রাণকার্য, কাবিখা, ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ড এবং ওএমএসে আলু বিতরণে পদক্ষেপ গ্রহণ, পাশাপাশি জাতীয়ভাবে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, এতিমখানা, জেলখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলে আলু খাওয়া বাধ্যতামূলক করা।
৪. এছাড়া সময় মতো বাজারজাতের উদ্দেশ্যে সব জেলা প্রশাসককে অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট ডিলারদের হিমাগার থেকে সরবরাহ নিয়ে আলু বিতরণের কর্মসূচি গ্রহণ, সারাদেশে টিসিবির আওতাভুক্ত সব ডিলার ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীকে ওএমএসের মাধ্যমে আলু বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া।
৫. আলু রপ্তানি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আমদানিকারক দেশের চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত জাতের বীজ আমদানি ও বীজ উন্নয়ণকরণ এবং আলুর মাটিজনিত রোগ দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণ, রপ্তানি বাড়াতে বিদেশে অবস্থিত দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে বাজার অনুসন্ধান ও সম্প্রসারণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এছাড়া সরকারের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি রেফার ভেসেল ক্রয় করার প্রস্তাব করা হয়।
৬. আলু রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা ২০ শতাংশ থেকে উন্নীত করে ৩০ শতাংশ ধার্যকরণের জন্য প্রস্তাব করা হয়।
৭. আলুর উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিপণন ও রপ্তানি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিএডিসি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে, এফবিসিসিআই ও বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠনের জন্য প্রস্তাব।
৮. আলুকে দ্বিতীয় প্রধান খাবার হিসেবে জনপ্রিয় করা এবং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারি উদ্যোগে সব গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারে পদক্ষেপ নেওয়া। সব বিভাগ, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আলুর তৈরি খাদ্যমেলা ও সুশীল সমাজকে নিয়ে প্রচার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রস্তাব করা হয়।
৯. হিমাগারসমূহের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বিদ্যুৎ বিল স্থগিত রেখে পরবর্তীতে সারচার্জ ছাড়া কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধের সুযোগ প্রদানের জন্য প্রস্তাব করা হয়।
১০. এছাড়া হিমাগার কৃষিভিত্তিক শিল্প বিবেচনায় এই শিল্পের উৎস কর প্রত্যাহারের দাবি করা হয় প্রস্তাবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- এফবিসিসিআই’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী, কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসতিয়াক আহমেদ, পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুছ, ময়নাকুটি কোল্ড স্টোরেজের চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুর মোহাম্মদ ও টিএমএসএসের প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা বেগম প্রমুখ।
সুত্রঃ জাগো নিউজ