দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) লেনদেন শুরু হওয়া প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের করপোরেট গ্যারান্টিযুক্ত বন্ডে বিনিয়োগ করা নিরাপদ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রাণ এগ্রোর বন্ডের গ্যারান্টার হিসেবে রয়েছে বিশ্বের খুবই নাম করা একটি প্রতিষ্ঠান। তারা গ্যারান্টি দিচ্ছে, এখানে বিনিয়োগ করলে কোনো ক্ষতি হবে না। যদি হয় ওরা সেটার ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবে। ইন্স্যুরেন্সের মতো একটা ব্যবস্থা। যে কারণে এখানে বিনিয়োগটা নিরাপদ।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যলয়ে এটিবির লেনদেন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার শেখ শামছুদ্দিন আহমেদ।
শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, একটা মানুষের কোনো একটা অঙ্গ মিসিং হলে আমরা তাকে বলি ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জ। তার মানে ওই অঙ্গ বাদ দিয়ে একটা মানুষের মতো পূর্ণাজ্ঞ কাজ করতে পারে না। ক্যাপিটাল মার্কেটের কম্পোনেন্টের অনেকগুলো আমাদের মার্কেটে মিসিং। সে কারণে ক্যাপিটাল মার্কেট ঠিকভাবে কাজ করছে না।
তিনি বলেন, অলটারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডের মতো নতুন একটা প্রডাক্ট এখন আসলো। আরও কিছু বাকি আছে, আসবে। এর সুফল কিন্তু আজকেই পাওয়া যাবে না। সুফল পাওয়া যাবে সামনের দিনগুলোতে। এগুলো হওয়া উচিত ছিল আরও ২০-৩০ বছর আগে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মিসিং কম্পোনেন্টের মধ্যে এটিবি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আমাদের সব কোম্পানিকে লিস্টিং দেওয়া সম্ভব হয় না। যে কোম্পানির অবস্থা দুর্বল, আমাদের তাদের মানা করি না। কিন্তু লিস্টিংয়ের অনুমোদন দেওয়া সম্ভব হয় না।
‘আবার কিছু কোম্পানি আছে, যারা নিজেরাই আসতে চায় না। তারা চিন্ত করে এত কষ্ট করে কোম্পানি করেছি, কেন তা পাবলিকের কাছে দিয়ে দেবো। অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে, আমরা তাদের লিস্টিংয়ের জন্য আসতে বলি। তারা আসবো আসবো করে খুবই দোদুল্যমান। এ বোর্ড সেখানে একটা বড় ভূমিকা রাখবে’ বলেন শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, প্রাণ এগ্রোর বন্ডের গ্যারান্টি যে প্রতিষ্ঠান দিয়েছে, তারা ওয়ার্ল্ডের খুব নাম করা কোম্পানি। তারা গ্যারান্টি দিচ্ছে, এখানে বিনিয়োগ করলে কোনো ক্ষতি হবে না। যদি হয় ওরা সেটার ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবে। ইন্স্যুরেন্সের মতো একটা ব্যবস্থা। যে কারণে এখানে বিনিয়োগটা নিরাপদ।
এসময় অধ্যাপক শিবলী বলেন, দুই ভাই-বোন (আহসান খান চৌধুরী ও উজমা চৌধুরী) এক লাখ ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। এ ধরনের কোম্পানির অর্থায়ন বন্ধ করা উচিত হবে না।
তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যবসার জন্য কোনটা প্রয়োজন, সেটা ব্যবসায়ীরা বুঝবে, আমরা বুঝবো না। এক-দুই শতাংশ কস্ট কমানোও কিন্তু বিরাট ব্যাপার। আমি যতটুকু জেনেছি, প্রাণের টার্নওভার ৪০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এখানে এক শতাংশ কস্ট কমাতে পারলে ৪০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা চলে আসবে। এ জিনিসগুলো ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটে খুবই ইমপর্টেন।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মন্দা, জবলেস অবস্থায় রয়েছে মানুষ। সেখানে আমরাও অনেক অস্বস্তিতে থাকি। তারপরও আমরা ভালো অবস্থানে আছি। আমাদের কাছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন প্রজেক্ট নিয়ে আসছে। নতুন নতুন এক্সপানশন প্লান নিয়ে আসছে। নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ নিয়ে আসছে।
প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের করপোরেট গ্যারান্টিযুক্ত বন্ড এবং লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের শেয়ার নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড। বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এটিবির উদ্বোধন করেন।
ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুর রহমান মজুমদার, প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক উজমা চৌধুরী এবং লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের পরিচালক মাহবুবুল আনম।
এটিবির লেনদেন উদ্বোধনের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ডিএসইর সঙ্গে প্রাণ এগ্রো লিমিটেড এবং লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের পৃথক দুটি চুক্তি সই হয়।
এটিবি নিয়ে সই হওয়া এ চুক্তিপত্রের একটিতে ডিএসইর ডিজিএম সাইয়িদ মাহমুদ জুবায়ের ও প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক উজমা চৌধুরী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সই করেন।
অন্যটিতে সই করেন ডিএসইর ডিজিএম শফিকুল ইসলাম ভুইয়া ও লংকাবাংলার সিকিউরিটিজের এমডি নাছির উদ্দিন চৌধুরী।
সুত্রঃ জাগো নিউজ