ফরিদপুরে পাঁচ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদনফরিদপুরে পাঁচ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদন

 

ফরিদপুরে চলতি মৌসুমে ৪১ হাজার হেক্টরের জমিতে চাষিরা পেঁয়াজ উৎপাদন করেছে পাঁচ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিকটন।

ফরিদপুরের মাটি পেঁয়াজ আবাদে উপযোগী হওয়ায় দেশের মোট পেঁয়াজ উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে এ জেলা। জেলায় তিন ধরনের পেঁয়াজ চাষ হয়। মুড়ি কাটা, হালি ও দানা পেঁয়াজ। নয়টি উপজেলার মধ্যে নাগরকান্দা, সালথা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর সদর, ভাঙ্গা ও সদরপুরে পেঁয়াজের আবাদ হয় বেশি।

ফরিদপুর জেলার কানাইপুর বাজারসহ কয়েকটি পেঁয়াজের বাজারের গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে প্রান্তি পর্যায়ে চাষীরা পাইকারদের (ব্যবসায়ীদের) কাছে মণপ্রতি ১২শ থেকে ১৩শ টাকা দরে বিক্রয় করছে।

জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি আশুতোষ মালো জানান, এ মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদে খরচ একটু বেশি হয়েছে। মণ প্রতি উৎপাদন খরচ হয়েছে ৭শ থেকে ৯শ টাকা। চাষি পর্যায়ে আমরা যদি মণপ্রতি ১৫শ থেকে ১৮ টাকায় দর পেতাম তাহলে বেশি লাভ হতো।

কানাইপুর বাজারের পেঁয়াজ ব্যসায়ী ও পেঁয়াজ চাষী শাহজাহান মিয়া জানান, শুক্রবার ও মঙ্গলবার এ বাজারের হাট বসে। গত ১৫দিন হলো মণ প্রতি চাষি পর্যায়ে বিক্রয় করছে ১২শ থেকে ১৩শ টাকায় । যা আগে হাজারের নিচে ছিলো।

তিনি বলেন, জেলার পেঁয়াজের বাজার হিসাবে বেশি পরিচিত, বাইলে বাজার, রামকান্তপুর বাজার, ঠেনঠেনিয়া বাজার, ময়েনদিয়া বাজার, ফকিরের বাজার, নালার মোড় বাজার, কাদিরদী বাজার, সাতৈর বাজার। এই বাজারগুলোতে চাষিরা প্রচুর পেঁয়াজ নিয়ে আসে।

কানাইপুর বাজারের আরেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বিলাল মাতুব্বর জানান, আমরা চাষিদের কাছ থেকে যে দরে পেঁয়াজ ক্রয় করছি তার থেকে সামান্য বেশি দরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করছি। তিনি দাবি করে চাষিদের পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক কোনো ব্যবস্থা নেই, যে কারণেই দ্রুত বাজারের ছেড়ে দেয় তারা।

ফরিদপুরের কানাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আদর্শ পেঁয়াজ চাষি ফকির বেলায়েত হোসেন জানান, এই অঞ্চলের চাষিরা মূলত লাল তীর কিং নামের পেঁয়াজের আবাদ বেশি করে। যা অন্যযে কোন জাতের চেয়ে আবাদ বেশি হয়। তবে এই পেঁয়াজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। আমাদের দাবি ফরিদপুর অঞ্চলের পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নির্মাণের।

তিনি বলেন, ৫২ শতাংশের বিঘায় ভাল ফলন হলে ১শ ২০ থেকে ৩০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. হয়রত আলী জানান, এই মৌসুমে জেলায় ৪১ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। তিনি বলেন, জেলায় সরকারি হিসাবে উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিক টন। বৈরী আবহাওয়ার কারেণ গত বছরের চেয়ে ৩৮ হাজার মেট্রিকটন কম হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে বাজারের যে দর (মণ প্রতি ১২শ থেকে ১৩শ টাকা) যাচ্ছে তাতে চাষীরা পর্যায়ে মণ প্রতি ২শ থেকে তিনশ টাকা লাভ পাচ্ছেন।

ফরিদপুর জেলায় পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে ১৭ হাজার মেট্রিকটন, এর বাইরে যে পেঁয়াজ থাকে সেটা দেশের বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করা হয়।

সুত্রঃঢাকাটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *