ফরিদপুরে ফের বন্যায় দিশেহারা কৃষকফরিদপুরে ফের বন্যায় দিশেহারা কৃষক

নিউজ ডেস্ক
ফরিদপুরে প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে নদ-নদীর পানি। বর্তমানে পদ্মার পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে আবার নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। নষ্ট হচ্ছে ফসলের ক্ষেত।

শনিবার (০৩ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গিয়েছে পদ্মার চরে বাসবাস করা আবারো বন্যার কবলে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, প্রতিদিন পদ্মা ও মধুমতি নদী এবং আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বাড়ছে। গত ১২ ঘণ্টায় পদ্মার গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান বলেন, নতুন করে বন্যা হওয়ায় ইউনিয়নের দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এছাড়া বাঘের টিলা এলাকায় পান্নুর দোকান থেকে কালুর বাজার পর্যন্ত সড়কটির এক কিলোমিটার, আয়জদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকার একটি সড়ক আধা কিলোমিটার এবং চাটাম বাজার থেকে বরান বিশ্বাসের ডাঙ্গীতে যাওয়া সড়কটির পৌনে এক কিলোমিটার অংশ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ডাল ও শীতকালীন সবজির অন্তত ২০০ বিঘা জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

সদরের ডিক্রির চরের ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস কৃষি। একের পর এক বন্যায় এ মানুষগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার বন্যায় ভুট্টা, বাদাম, পাটের ক্ষতি হয়েছে। এখন আবার পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়া কলাই, পেঁয়াজ বীজতলা তলিয়ে গেছে। কয়েক দিনে চরের নিম্নাঞ্চল পানি প্রবেশ করায় গবাদিপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে।

আলীয়াবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আকতারুজ্জামান বলেন, ইউনিয়নের ভাজনডাঙ্গা এলাকায় পদ্মা নদীর শাখা মান্দারতলা খালের পাড় উপচে আশপাশের এলাকায় বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী উপপরিচালক আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, জেলায় গত তিন দফা বন্যায় কৃষির ক্ষতি হয়েছিল ১০৮ কোটি টাকার। তিন ধাপের বন্যা শেষ হওয়ার পর কৃষকদের প্রণোদনা হিসেবে ছয় হাজার বিঘা জমিতে মাসকলাই রোপণের জন্য প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল। তবে নতুন করে বন্যা শুরু হওয়ায় চর এলাকার জমিতে আবাদ করা বিপুল পরিমাণ মাসকলাই পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে নতুন করে বন্যার কথা জানা গেছে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, বন্যার গতি- প্রকৃতি এবার বেশ অদ্ভুত ধরনের। একবারের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আবার বন্যা আঘাত হানছে। তবে বন্যা পরিস্থিতির প্রতি সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। দুর্গত মানুষের যে জাতীয় সাহায্য দেয়া প্রয়োজন প্রশাসন তা দেবে।
সুত্রঃ সময় নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *