সরকারের আহ্বানে মাঠে কৃষিপ্রযুক্তি সম্প্রসারণে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস কৃষি এসোসিয়েশনের সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত আবাদের চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লড়ছেন তারা। যুক্ত আছেন মাঠ পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের সব রকম ত্রাণ কার্যক্রমে। অনুপ্রেরণার আন্তরিক রসদ জুগিয়ে মাঠের সম্মুখযোদ্ধা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর সমন্বয়-তদারকিও করছেন তারা।
পাশাপাশি এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে মানবিক সাহায্যের সমন্বিত উদ্যোগ। যোগাযোগ করা হলে এসোসিয়েশনের দায়িত্বে থাকা একজন কর্মকর্তা জানাচ্ছিলেন তাদের অনেক উদ্যোগ ও মানবিক সাহায্যে সাড়া দেয়ার কথা। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সদস্যদের নববর্ষ ভাতা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে সাড়া দেয়ার লক্ষ্যে খোলা হয়েছে হটলাইন।
একদিনের একটি মানবিক আবেদনে সাড়া দেয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, হটলাইনে শেষ রোজার বিকেল বেলা যোগাযোগ ট্র্যাকিং-এর সূত্রে জানা যায় করোনা আক্রান্ত এক মাঠ কর্মীর অসহায়ত্বের কথা। তিনি নিজে কর্মস্থলে করোনায় আক্রান্ত। ঢাকায় পরিবারের ৬ সদস্যের মধ্যে ৫ জনই করোনা সংক্রমণে বাঁচা-মরার সংগ্রামে আতঙ্কিত। মাঠকর্মীকে সান্ত্বনা দিয়ে বলা হলো, কান্নায় করোনা যাবে না। আপনি সাহসের সাথে এ অবস্থায় করণীয় শতভাগ মেনে চলুন। আপনার পরিবারের দায়িত্ব এসোসিয়েশন নিচ্ছে।
তিনি বলেন, তার জন্য জরুরি সাহায্য পৌঁছানো দরকার। পরিবারের আপাত সুস্থ একমাত্র সদস্যকে অনুরোধ করা হলো চাহিদা জানানোর। আইটেম ১৭/১৮টি। কিনতে কিনতে বাজারেই মাগরিবের আজান। ইফতার বা এক ঢোক পানিও মুখে দেয়া সম্ভব হলো না। দাপ্তরিক একটি গাড়ির ব্যবস্থা হলো সহকর্মীর সহায়তায়। এ দোকান ও দোকানে রাখা ব্যাগ, বস্তা কুড়িয়ে গাড়িতে তোলা হলো এক পরিবারের প্রায় ১৫ দিনের খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী। যাত্রা হলো মহাখালীর গন্তব্যে। প্রায় অন্ধকার গলিতে অপেক্ষায় ছিলেন সাহায্যপ্রার্থী। নামানো হলো মাল-সামানা। সাহায্য নয়, প্রার্থী যেন ঈদের চাঁদটাই হাতে পেলেন। ঘরে ফিরতে রাত ৯টা। মহাদুর্যোগে একটি পরিবারের কাছে যেয়ে তাদের বিষন্ন মুখে ছোট্ট ক্ষীণ একটু হাসির ঝিলিক দেখে সত্যি মনে শান্তি পেলো।
এসোসিয়েশন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আরো জানান, দায়িত্ব পালনকালে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা কৃষি ইনস্টিটিউটের একজন সিনিয়র ইনস্ট্রাকটর, বৃহত্তর সিলেটের ধর্মপাশা, জৈন্তাপুর, মাধবপুর উপজেলা কৃষি অফিসারবৃন্দ, কুমিল্লার বরুড়ার উপজেলা কৃষি অফিসার। এছাড়া আরো আক্রান্ত হয়েছেন হবিগঞ্জ ও চট্টগ্রামে একজন করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা।
করোনাকালের ঝুঁকি এড়িয়ে আরো ফলপ্রসূ কৃষি সম্প্রসারণ সেবা ও জরুরি কৃষিপ্রযুক্তি দ্রুত কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্যে মাঠপর্যায়ে গাড়ির প্রয়োজনের কথা জানান তিনি। আর প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ঝুঁকিভাতার আওতায় আনা হলে তারা আরো বেশি অনুপ্রাণিত হবেন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।