ফেব্রুয়ারিতে রেকর্ড দামে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্য কেনাবেচাফেব্রুয়ারিতে রেকর্ড দামে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্য কেনাবেচা

 

সবশেষ ‘খাদ্য মূল্যসূচক’ তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যখন তথ্য সংগ্রহ করে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) তখনও ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হয়নি; আর এখন এ সূচক প্রকাশ করে জাতিসংঘের সংস্থাটি বলছে, ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যপণ্যের মূল্যে রেকর্ড হয়েছে।

অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি দর বাড়ার এ পরিক্রমায় আগের বছরের একই মাস ফেব্রুয়ারির তুলনায় দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ১ শতাংশ বলে শুক্রবার প্রকাশিত সবশেষ প্রতিবেদনে বলছে সংস্থাটি। ভোজ্যতেল ও দুগ্ধজাত পণ্যের ঊর্ধ্বগতিকেই প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

রয়টার্স লিখেছে, সংস্থাটির এমন তথ্য প্রকাশের পর বিশ্লেষকরা ইউক্রেইন যুদ্ধ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে তা বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্য রপ্তানিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তারা বলছেন, ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের আগেই কৃষ্ণ সাগরকে ঘিরে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে অস্থির হতে শুরু করে কৃষিপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার। এখন বেশিদিন ধরে যুদ্ধ হলে এর প্রভাব এড়ানো কঠিন।

জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা এফএও বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি কেনাবেচা হয় এমন খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ে গবেষণা চালিয়ে এ সূচক প্রকাশ করে। সাধারণত এতে দানাদার খাদ্যশস্যের পাশাপাশি ভোজ্যতেল ও দুগ্ধজাত পণ্যসহ পাঁচ ধরনের পণ্য থাকে। প্রতি মাসে খাদ্যপণ্যের গড় দামের এ সূচক প্রকাশের পাশাপাশি বিশ্ববাজার এবং খাদ্যশস্য ও পণ্যের উৎপাদনের পূর্বাভাসও দিয়ে থাকে সংস্থাটি।

এফএও এর প্রতিবেদন বলছে, গত ফেব্রুয়ারিতে ‘খাদ্য মূল্যসূচক’ গিয়ে পৌঁছেছে ১৪০ দশমিক ৭ পয়েন্টে। এর মাস জানুয়ারিতে সংশোধনের পর যা কিছুটা কমে ১৩৫ দশমিক ৪ পয়েন্ট হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীর সংকট কাটিয়ে পুনরুদ্ধারের পথে থাকা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে উচ্চ খাদ্যপণ্যের দাম মূল্যস্ফীতি ঘটাচ্ছে। এজন্য অতিরিক্ত ব্যয়ের চাপে থাকা আমদানিনির্ভর দেশগুলোর দরিদ্র জনগোষ্ঠী ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

সংস্থাটির অর্থনীতিবিদ উপালি গ্যালকেটি বলেন, খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম বাড়ার পেছেন শস্য উৎপাদন পরিস্থিতি এবং কতটুকু রপ্তানি হতে পারে সেই তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি আশঙ্কা একটি খণ্ডিত কারণ।

“শস্য উৎপাদনের তথ্যের বদলে দাম বাড়ার পেছনের মূল কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে জ্বালানি, সার ও গবাদি পশুর খাবারের মতো খাত।“

এসব কিছুর ঊর্ধ্বমুখী দাম শস্য উৎপাদকদের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং মুনাফা কমছে বলে তারা নতুন বিনিয়োগ ও উৎপাদন সম্প্রসারণের আগ্রহী হচ্ছেন না, যোগ করেন এ অর্থনীতিবিদ।

এফএও এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মাস ফেব্রুয়ারিতে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ভোজ্যতেলের (ভেজিটেবল অয়েল) দাম সাড়ে ৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড মূল্যে নিয়ে গেছে। পাম, সয়াবিন ও সূর্যমূখী তেলের দাম বেড়ে যাওয়া এর পেছনে কাজ করেছে। ইউক্রেইন ও রাশিয়া বৈশ্বিক চাহিদার ৮০ শতাংশ সূর্যমুখী তেল সরবরাহ করে থাকে।

অন্যদিকে গত মাসে দানাদার শস্যের দাম বেড়েছে ৩ শতাংশ, যার মধ্যে ৫ দশমিক ১ শতাংশ ভুট্টা এবং ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ছে গমের দাম। আর দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেড়েচে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।

 

সুত্রঃ  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *