নিউজ ডেস্কঃ
বোরো কাটা-মাড়াই সবে মাত্র শেষ হয়েছে। শুরু হচ্ছে আমন মৌসুম। কৃষকেরা আমনের বীজতলা পরিচর্জাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর এক সপ্তহের মধ্যে আমন রোপন শুরু হবে বরেন্দ্র অঞ্চলজুড়ে।
তবে, চলতি মৌসুমে আমন চাষে বাড়তি আগ্রহ আছে কৃষকের মধ্যে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এ বছর বোরো ধানে ভাল দাম পেয়েছেন। ফলনও ভাল গেছে। তাই এবার ধান চাষ করে কৃষকেরা লাভের মুখ দেখেছেন। শুধু ধানেই নয়, চলতি বছর মুসুর, সরিষা, আলুসহ অন্যসব রবিসশ্য বাজার বেশ চড়া ছিল শুরু থেকেই। এতে খুশি কৃষক।
রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে চলতি মৌসুমে জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝা মাঝি সময় থেকে আমন চাষে প্রস্ততি শুরু করেছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। আষাঢ় মাস শুরুর আগেই বৃষ্টি হতে শুরু হয়েছে এ অঞ্চলে। তাই বৃষ্টি পেয়েই জরেসরে বীজতলা পরিচর্যা ও সার প্রয়োগ শুরু করেছেন কৃষকেরা। আষাঢ়ের প্রথম সপ্তহ থেকেই বীজতলা থেকে চারা তুলে আমন রোপন শুরু করবে ক্ষেতে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রাসরণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আমনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৭৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে। তবে, লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে বেশি আমন আবাদ হবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা আশা করছেন। এর জন্য জেলায় এবার বীজতলা হয়েছে ৩ হাজার ৬৬৭ হেক্টর জমিতে। এছাড়াও রাজশাহী অঞ্চলের, রাজশাহী, নঁওগা, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আমন চাষাবাদ হবে আরো ৩ লক্ষ্য ৫০ হাজার হেক্টরের উপরে। এই জন্য এ অঞ্চলে বীজতলা হয়েছে ১৮ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা শুগনা গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান জানান,দাম না পেয়ে কয়েক বছর ধরে ধান চাষ করে লোকসান হচ্ছিল। চলতি মৌসুমে কৃষকেরা বোরোর ন্যায দাম পেয়ে কিছুটা হলেও আগের ক্ষতি পুশিয়ে নিয়েছে। তাই চলতি আমন মৌসুমে কৃষকদের মধ্যে ধান চাষ করার বাড়তি আগ্রহ বেড়েছে।
তিনি আরো বলেন, চলতি মৌসুমে ৩২ বিঘা জমিতে আমন চাষাবাদ করবেন। এই জন্য গত ১ মাস আগে বাড়ির পার্শে ৩৫ শতক জমিতে সাদা স্বর্না জাতের বীজতলায় বীজ বোপন করেছেন।
রাজশাহীর তানোর উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, আমন চাষে সেচ খরচ লাগে না। সার খরচও কম।বর্ষার পানির উপর নির্ভর করে উচুঁ নিচু সকল জমিতে আমন চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। এবার ধানের দাম বেশি পাওয়াই আমন চাষাবাদে আরো আগ্রহী হয়ে উঠেছে কৃষকেরা।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, করোনা কালে খাদ্য উৎপাদন করতে একটুকু যেন জমি ফাকা না থাকে এমন নির্দেশ খোদ প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা দিয়েছেন। তাই খাদ্য উৎপাদন করতে কৃষকদের সার, বীজ সহ নানান সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে কৃষি বিভাগ থেকে। এছাড়াও চলতি বোরো ধানের ন্যায দাম যেন কৃষকেরা পাই সেজন্য সকল প্রকার সহায়তা করা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, চলতি মৌসুমে আমন চাষাবাদ করার জন্য জ্যৈষ্ট মাসের ২০ তারিখ থেকে বীজতলার কাজ শুরু করেছেন এই অঞ্চলে কৃষকেরা। বীজ প্রায় হয়ে এসেছে। আগামী এক সপ্তহের মধ্যে আমন রোপন শুরু করবে কৃষকেরা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আমন চাষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সুত্রঃপাদ্মা টাইমস