নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী অঞ্চলে বারি রবি মৌসুমী সবজি বাঁধাকফি চাষ করে এবার কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। অন্যান্যবার কপি চাষ করে দাম না পাওয়াতে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তবে এবার বন্যা ও অধিক বর্ষনের কারণে বেশীভাগ আবাদি জমি ডুবে যাওয়াতে এবার সবজির দাম পাচ্ছে বলে কৃষকরা জানান। এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে এবার বন্যার আশঙ্কা কাটিয়ে এই অঞ্চলে সবজির ভালো উৎপাদন হয়েছে। বাজারে সকল প্রকার সবজির দামে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। তবে কৃষি কৃষকরা মাঠে সবজি ও বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করলেও মাঠ পর্যায়ের কৃষি উপসহকারি কর্মকর্তাদের দেখা মিলেনা এমনটাই অভিযোগ কৃষকদের।
রাজশাহীর পবা উপজেলার মুরারী পুরের কৃষক মনোয়ার হোসেন। তিনি গত ১০ বছর হতে বাঁধাকফি চাষাবাদ করে আসছেন। গেলো বছর সামান্য লাভ হলেও এবার বড় ধরনের লাভবান হয়েছে। এবার তিনি জমি বর্গা নিয়ে ১১ বিঘা জমি চাষাবাদ করে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। বিঘাপ্রতি বাঁধাকফি চাষ হতে শুরু করে ফসল উঠা পর্যন্ত ৪০ হতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। এবার ১ বিঘা জমির বাঁধাকফি ঠিকা ১ লক্ষ টাকার অধিক দামে বিক্রি করেছেন। ফলে সব মিলিয়ে তিনি প্রায় ৪- ৫ লক্ষ টাকা লাভ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। এবার অতিবর্ষণে অনেক জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়াতে এই দাম পাচ্ছে ফলে এই দাম পেয়ে তারা খুশি বলে জানান। তবে তার অভিযোগ এবার রোগ বালাই বেশী হওয়াতে সবজি আবাদ করতে হিমশিম খেতে হয়েছে এই এলাকায় কৃষি বিভাগের কোন কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিন হতে মুখে দেখা যায় না। ফলে কোন পরামর্শ পান না। নিজেদের প্রচেষ্টায় তারা চাষাবাদ করে আসছেন বলে জানান।
মধুপুর মুরারীপুরের কৃষক বিপুল ও গোলাম মোস্তফা জানান, প্রতিবছর বাঁধাকফি চাষ করে থাকি। এবার তিনি ২ বিঘা জমিতে বাঁধাকফি চাষ করে ফলন ও দাম ভালো পাওয়াতে লাভবান হয়েছেন। দুই বিঘা জমিতে ৭০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। এই বাঁধাকফি জমি হতেই পাইকারেরা ১ বিঘা জমির বাঁধাকফি ১ লাখ হতে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন বলে জানান। দাম ভালো পাবার কারণ হিসেবে এবার বর্ষায় জমি ডুবে যাওয়ার কথা বলছেন। তবে দাম পেয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন এই চাষি। তবে তাদের অভিযোগ পবা উপজেলার কোন কৃষি কর্মকর্তাদের মুখই দেখতে পান না। ফলে কৃষি বিষয়ক পরামর্শ হতে দূরে আছেন তারা।
এবার পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা জানান, চলতি মৌসুমে বাঁধাকপি ২৮০ হেক্ট ও ফুল কপির আবাদ হয়েছে ১৯৫ হেক্টর। যা লক্ষমাত্রা ছাড়িয়েছে বলে জানান। তাদের কৃষকদের মাঝে সঠিক পরামর্শ ও মনিটরিং থাকার কারণে এসব অর্জন হয়েছে বলে জানান। কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে পান না কৃষকদের এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আগে যে নিয়ম চালু হয়ে তার জন্য সেভাবে পান না। তবে ইউনিয়ন পরিষদের নির্দিষ্ট দিন ও সময়ে বসেন বলে জানান।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মোছা: উম্মে ছালমা জানান, এবার রাজশাহী জেলায় ১৮ হাজার ১৯৩ হেক্টর জমিতে বাঁধা ও ফুল কপির আবাদ হয়েছে যা গতবারের লক্ষমাত্রা ছড়িয়েছে। সবজি উৎপাদনে প্রতিবছর কর্মপরিকল্পণা করে উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের তা বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানান।
শর্ট-২ মোছা: উম্মে ছালমা । অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সুত্রঃ বাংলার জনপদ