বাঘার আম এখন পৃথিবী বিখ্যাত’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার উক্তিবাঘার আম এখন পৃথিবী বিখ্যাত’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার উক্তি

নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ্ সুলতার জনি তাঁর ফেসবুক পেইজে লিখেছেন, বাঘার আম কেবল বাংলাদেশ বিখ্যাত নয়, এ উপজেলার আম এখন পুরো পৃথিবী বিখ্যাত এবং সকলের কাছে সমাদৃত। এই আমের সাথে তিনি কাল বৈশাখী ঝড়ের ক্ষতিকারক দিক এবং এটি বোঝার উপায় বিশ্লেষন করেছেন।

তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজে উল্লেখ করেছেন, মাটির গুনগত কারণে বাঘা উপজেলায় উৎপাদিত আম শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো পৃথিবীতে এখন বিখ্যাত। এই উপজেলায় উৎপাদিত আম দেশের অভ্যান্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। তিনি এই অঞ্চলের আম সম্পর্কে অভিমত ব্যাক্ত করতে গিয়ে একটি মানচিত্রের মাধ্যমে কালবৈশাখি ঝড়ের কথা তুলে ধরেন এবং এই ঝড় থেকে সবাইকে সতর্ক হবার আহবান জানান। তাঁর মতে, প্রায় ৯০% গতিপথ থাকে পশ্চিম-উত্তর থেকে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত কালবৈশাখী ঝড়ের। যা কেবল রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা দিয়ে অতিবাহিত হয়। এর ফলে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ও আমের কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে আম উৎপাদনের সাথে জড়িত কৃষক, আম ব্যবসায়ী, আম বহনের জন্য নিযুক্ত পরিবহন ও শ্রমিকগণ আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন।

তিনি কালবৈশাখী ঝড়ের বার্তা বোঝার উপায় সম্পর্কে বলেন, আপনি সাধারণভাবে বুঝবেন কি করে যে কয়েকঘন্টার ভেতরে আপনার এলাকা কালবৈশাখি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে? হ্যাঁ অনেকটা বোঝার উপায় আছে, আপনি দেশের যে এলাকায় বাস করেন না কেন-সেই এলাকা থেকে যদি আপনি দেখেন আপনার পশ্চিম দিক থেকে সামান্য উত্তর দিক জড়িয়ে দুরে মেঘের গর্জন শোনা যাচ্ছে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার এলাকা ১ থেকে ৩ ঘন্টার ভেতরে কালবৈশাখি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। আর রাতের বেলায় হলে খেয়াল করবেন আপনার এলাকা থেকে পশ্চিম দিক ও সামান্য উত্তর দিক থেকে দুরে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে তাহলে বুঝবেন আপনার এলাকা ১ থেকে ৩ ঘন্টার ভেতরে কালবৈশাখি দ্বারা আক্রান্ত হতে যাচ্ছে।

এগুলো আপনি ভালোভাবে বুঝতে পারলে আপনি আপনার এলাকায় কালবৈশাখি ঝড়ে আক্রান্ত হবার একটা সম্ভাব্য ৮০% নিশ্চিৎ হতে পারবেন। যদি আপনার এলাকা থেকে সোজা উত্তর দিকে বা উত্তর পূর্ব দিকে বা পূর্ব দিকে বিদ্যুৎ চমকায়, বা মেঘের গর্জন শোনাযায় তাহলে আপনার এলাকা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা নেই, যেটা হবে সেটা হলো আপনার এলাকায় কিছুটা দমকা হাওয়া হয়ে কিছু মেঘ চলে যাবে, কিংবা বৃষ্টি হলেও দুএক ফোটা মাত্র। আবার দক্ষিণ পশ্চিম বা দক্ষিণ দিক বা দক্ষিণ পূর্ব পাশে মেঘের গর্জন বা বিদ্যুৎ চমকালেও আপনার এলাকা কালবৈশাখিতে আক্রান্ত হবেনা, শুধুমাত্র ঠান্ডা হাওয়া বয়ে যাবে।

কৃষি কর্মকর্তার মতে, এই সিস্টেম শুধুমাত্র মার্চ টু জুন মাস পর্যন্ত বা মৌসূমী বায়ু দেশের উপর আসার আগ পর্যন্ত প্রযোজ্য। আপনি এ পদ্ধতিতে প্রায় ৮০% পুর্বাভাস করতে পারলেও আরোও অনেক আগে জানার জন্য বা আরোও নিক্ষুতভাবে জানার জন্য অবশ্যই আপনাকে একজন আবহাওয়াবিদ এর সাহায্য নিতে হবে। তবে এ পদ্ধতিতে আপনি দেশের যেকোনো স্থানে থেকে অন্তত রাস্তা ঘাটে বা নদী পার হবার সময় হটাৎ কালবৈশাখি দ্বারা আক্রান্ত হবার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, সু-স্বাধু আমের রাজধানী হিসাবে খ্যাত বাঘা উপজেলায় ৯ হাজার হেক্টর আম বাগান রয়েছে। এসব বাগানে প্রায় শতাধিক জাতের আম উৎপাদন হয়ে থাকে। সব জাতের আম মিলিয়ে এবার বাঘায় দেড় থেকে ২ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমকে ঘিরে প্রতি মৌসুমে বাঘা এলাকায় অন্তত ২৫টি ছোট-বড় আমের বাজার (হাট) বসে। এর মধ্যে বড় বাজার বসে বাঘা সদর, মনিগ্রাম, বিনোদপুর, বাউসা ও পাকুড়িয়া এলাকায়।
সুত্রঃ ধূমকেতু নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *