বাঘা প্রতিনিধি।
ফসলের জমিতে মালচিং বা জাবড়া প্রয়োগ সম্পর্কে কম বেশি আমরা সবাই জানি। মাটির আদ্রতা ধরে রাখতে ফসলের জমিতে কৃষকরা সাধারণত মালচিং করে থাকেন। পেয়াজ, রসুনের জমিতেই খড় দিয়ে বেশি দেখা যায় মালচিং।
তবে, আধুনিক প্লাস্টিক মালচিং ফ্লিম ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন কৃষিতে নতুন উদ্যোগ।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় প্রথমবারের মত এই মালচিং পেপার ব্যবহার তরমুজ, শশা, মরিচ চাষ হচ্ছে।
আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাঘা উপজেলার বাউশা ও গড়গড়ি ইউনিয়নের ০৭ জন কৃষকের জমিতে মালচিং প্রদর্শনীর মাধ্যমে উক্ত ফসল চাষ হচ্ছে। এ জন্য অত্র প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের দেওয়া হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ এবং মালচিং পেপারসহ বিভিন্ন উপকরণ সহযোগিতা।
বাউশা ইউনিয়নের মোঃ মোশাররফ হোসেন, মোঃ আমিনুল ইসলাম এবং গড়গড়ি ইউনিউনের আল মামুন মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ, শশা, মরিচ আবাদ করছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ট্রেনিং এ সম্পর্কে তারা বিস্তারিত জানেন। পরে অফিসের সহযোগিতায় তারা এ পদ্ধতিতে ফসল আবাদ করেন। মালচিং পেপারের মাধ্যমে ফসল আবাদ করলে প্রায় ৩০% উৎপাদন খরচ কম হয়, ফলে অল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায়। তাছাড়া রোগবালাই ও আগাছা কম হওয়ায় গাছ সুস্থ সবল থাকে, কীটনাশক কম লাগে। সার ও সেচ খরচ প্রায় এক তৃতীয়াংশ কম লাগে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বাঘার কৃষিতে বৈচিত্রতা আনতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য আমরা কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করছি। কৃষির উন্নয়নে শিক্ষিত তরূন কৃষকরা এগিয়ে আসছে এইটা ইতিবাচক দিক।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, মালচিং পেপার পদ্ধতিতে ফসল আবাদ অত্যন্ত জনপ্রিয় একটা পদ্ধতি। এ পেপারের উপরের দিক সিলভার রং এর এবং নিচের দিক কালো রং এর। জমি চাষ দিয়ে বেড করে নিতে হয় এবং মূল চাষের সময় প্রয়োজন অনুযায়ী সার একবারে দিয়ে নিতে হয়। তারপর বেডের উপর পলিথিনের এই মালচিং পেপার এমনভাবে বিছিয়ে দিতে হয়, যাতে ভিতরে ফাপা না থাকে। তারপর নির্দিষ্ট দূরত্বে ছোট গোল করে ছিদ্র করে চারা রোপণ করতে হয়।
মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ মালচিং পেপার অত্যন্ত কার্যকরী একটি প্রযুক্তি। মালচিং পেপারের নিচে আগাছা ঢেকে থাকে, ফলে তা গাছের সাথে প্রতিযোগিতায় আসতে পারে না, ফলে গা সুস্থ সবল হয়ে বেড়ে উঠে এবং রোগবালাই দ্বারা কম আক্রান্ত হয়। এই মালচিং পেপার কমপক্ষ্যে দু মৌসুমে ব্যবহার করা যায়।