খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের কৃষিজমি সুরক্ষার লক্ষ্যে সারাদেশে মৌজা ও প্লটভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিংয়ের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এটি সম্পন্ন করা হলে সারাদেশের সব জমি সরকারের নখদর্পনে থাকবে। দেশের যে কোনো স্থানে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কৃষিজমি বিনষ্ট করা হলে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষিজমি সুরক্ষায় ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সারাদেশের জমির ব্যবহারের প্রকৃতি অনুযায়ী ডিজিটাল জোনিং করা হবে। এতে এক ক্লিকেই কৃষিজমির অবস্থান জানা যাবে। ডিজিটাল ভূমি জোনিংয়ের কাজ সম্পন্ন করা হলে দেশের যে কোনো অঞ্চলে কৃষিজমি সুরক্ষায় সরকার তাৎক্ষণিকভাবে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। একইসঙ্গে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ হ্রাসে আইন হচ্ছে
আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়, দেশের ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলার সিংহভাগই ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে। এ সংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার ভূমি সংক্রান্ত আইন-কানুন সংস্কার, বিভিন্ন নতুন আইন ও বিধি-বিধান তৈরির পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ভূমি অপরাধ প্রতিকার ও প্রতিরোধ আইনের খসড়া প্রণয়ন। এটি আইনে পরিণত হলে সরকারি-বেসরকারি খাতের ভূমি সংক্রান্ত অপরাধের তাৎক্ষণিক বিচার সম্ভব হবে। এতে ভূমি নিয়ে ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলার সংখ্যা হ্রাস পাবে।
ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটালাইজেশন
প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, ভূমি ব্যবস্থাপনায় ই-নামজারি, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, ডাক বিভাগের মাধ্যমে খতিয়ান এবং মৌজা ম্যাপ সরবরাহ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। তিন পাবর্ত্য জেলা ব্যতীত সারাদেশে মোট ৪৮৭টি উপজেলা ও সার্কেল ভূমি অফিস এবং তিন হাজার ৬১৭টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ইতোমধ্যে ই-নামজারি কার্যক্রম চালু হয়েছে। এর ফলে জনগণের সময়, খরচ, যাতায়াত, ভোগান্তি ও হয়রানি কমেছে।
ভূমিসেবা সহজীকরণ করতে ই-রেজিস্ট্রেশন ও ই-মিউটেশন ব্যবস্থার মধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে জমি রেজিস্ট্রেশনের আগে ডিজিটাল রেকর্ডরুম সিস্টেম থেকে জমির রেকর্ড অনলাইনে যাচাই করতে পারবেন সাব-রেজিস্ট্রার। একইভাবে রেজিস্ট্রেশনের সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজিস্ট্রেশন দলিল ও বিক্রীত জমির তথ্য ই-মিউটেশন সিস্টেমের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন। যার ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামপত্তন কার্যক্রম শুরু করা যাবে। ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে অধিগ্রহণকৃত সব জমি এবং সায়রাত মহাল সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে আপলোড করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সুত্রঃজাগোনিউজ